ফাইল ছবি
সরকার বিরোধী রাজনৈতিদলগুলোর আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়। পর্যটকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণে আগ্রহী নন। জলে-স্থলে সবখানেই পর্যটকশূণ্যতা বিরাজ করছে। ফলে মৌসুমের শুরুতেই লোকসানের শঙ্কায় পড়েছেন সেখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, বান্দরবানসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের হোটেল, স্যুট ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবারের কমপক্ষে ৮০ ভাগ আগাম বুকিং বাতিল করা হয়েছে ইতোমধ্যে।
সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে কুয়াকাটায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সমাগম ঘটে এবং হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা এ সময়ে ব্যবসায় লাভের মুখ দেখেন।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) কুয়াকাটার বেশ কয়েকটি হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হরতাল ও অবরোধের কারণে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা কমে গেছে। আগাম বুকিংও বাতিল করছেন অনেকে।
কুয়াকাটা গেস্ট হাউসের পরিচালক ও কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ সাংবাদিকদের জানান, তার হোটেলে রুম সংখ্যা ২২টি। একসঙ্গে হোটেলে অবস্থান করতে পারেন প্রায় ৭০জন। হরতাল-অবরোধের কারণে এখন হোটেল খালি।
শুক্রবার ও শনিবারের জন্য যে পর্যটকরা বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে আগাম বুকিং দিয়েছিলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ৮০ ভাগ আগাম বুকিং বাতিল হয়েছে জানান তিনি।
কুয়াকাটা সাগরতীরে আবাসিক হোটেল সৈকতে ৪০টি রুমের ২০টি বুকিং দেয়া ছিল আগামী ৩ ও ৪ নভেম্বর শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে। কিন্তু চলমান আন্দোলনের কারণে ১৫টি বুকিং বুধবার রাতে বাতিল করেছেন পর্যটকরা। বাকি পাঁচটির বুকিং বাতিলের আশঙ্কা করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, পর্যটনের সঙ্গে নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের পরিস্থিতি নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কুয়াকাটায় পর্যটক আসবে না। এ কারণে আবাসিক হোটেলগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এ সময়টাতে কুয়াকাটায় পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। হোটেল-মোটেলে কোনো সিট ফাঁকা থাকে না। আর এ বছর মৌসুমের শুরুতে কুয়াকাটায় কোনো পর্যটক নেই। হোটেলের সব রুম খালি পড়ে আছে।
হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন নেতা শেখ মো. জিয়া রহমান বলেন, দেশের রাজনৈতিক যে অস্থিরতা, তাতে পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। এ মৌসুমে বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে কুয়াকাটা পর্যটকে মুখরিত হওয়ার কথা থাকলেও এখন বেহাল দশা।
এদিকে পাহাড়েও নেই দর্শনার্থী। বান্দবানে হোটেল হিল ভিউ। ম্যানের আব্দুর রহিম আপন দেশকে জানান, তার হোটেলে ৮৪টি রুম রয়েছে। কোনো ভুকিং নেই। কদির ধরে শূণ্য পড়ে আছে। অর্ধশতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীকে বসিয়েই বেতন দিতে হচ্ছে। গড়ে দৈনিক অর্ধলক্ষ টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেন এই হোটেল ম্যানেজার।
তিনি বলেন, পাহাড় তো গত কয়েকমাস ধরে নানা কারণে ভীতিগ্রস্ত। এরমধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ। হরতাল-অবরোধের কারণে লোকজন আসছে না। শীতের আগমনের সময় দর্শনার্থী বেশি আসার কথা সেখানে হোটেলগুলো খালিপড়ে আছে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।