ফাইল ছবি
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাত থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। অনেক স্থানে আজ বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বৃষ্টি ঝরছে। একইসঙ্গে বইছে শীতের আবহ। আবহাওয়া অধিদফতর বলেছে, আজ রাজধানীসহ দেশের আট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। দুই দিন পর আগামী সোমবার থেকে শীত বাড়তে পারে।
এদিকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময়ে দেশের সর্বোচ্চ ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রা কমে গিয়ে গত কয়েকদিনের তুলনায় শীত একটু বেশি অনুভূত হচ্ছে আজ।
ঢাকায় আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১৪ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবেই এমন বৃষ্টি বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের উপকূলে আঘাত করেছিল গত মঙ্গলবার। এর প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের আকাশ মেঘলা থেকেছে। বুধবার দেশের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টিও হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম উত্তর দিকে এগিয়ে দুর্বল হয়ে গেছে। এরপর প্রথমে নিম্নচাপ ও পরে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় এটি ছিল উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও এর কাছাকাছি দক্ষিণ ওডিশা এলাকায়। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হয়ে চলেছে।
আজও চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজারকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়া অফিসের দেয়া সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ১৭ জেলার উপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত দেয়া সতর্কবার্তায় দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, রাজশাহী, রংপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পূর্ব অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবীর বলেন, দেশের দক্ষিণের জেলাগুলোয় বেশি বৃষ্টি হতে পারে। মূলত এটি ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাব। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে কমবেশি বৃষ্টি হতে পারে। এতে সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য ও দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
বৃষ্টির রেশ আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত থাকবে বলে জানান আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ। তিনি বলেন, শনিবার বৃষ্টি অবশ্য কমে আসবে।
চলতি বছর এ পর্যন্ত তিনটি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে বাংলাদেশে। গত ১৪ মে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। ২৪ অক্টোবর রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। এরপর ১৭ নভেম্বর আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’। এরপর ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ আঘাত করল ভারতের উপকূলে।
গত নভেম্বর মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি ছিল। ডিসেম্বরের প্রায় এক সপ্তাহ চলে গেলেও শীত তেমন পড়েনি। এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, বৃষ্টির পর দুই দিন শীত বেশি পড়বে না। তাপমাত্রা এখনকার মতোই থাকবে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টির কারণে শীত অনুভূত হতে পারে খানিকটা। বৃষ্টি চলে যাওয়ার দুই দিন বাতাসে আর্দ্রতা থাকবে। তাই তাপমাত্রা কমবে না তেমন। তবে দুই দিনের মধ্যে আর্দ্রতা কমে গেলে সোমবার থেকে শীত বাড়তে পারে।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।