ছবি : সংগৃহীত
শীতে বিপর্যস্ত দেশ। দেশের অনেক অঞ্চলে দিনে অল্প সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিলছে। তবু শীতের দাপট কমেনি।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, দেশের বেশির ভাগ এলাকায় শীতের অনুভূতি থাকবে আজ রোববারও (২১ জানুয়ারি)। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। অর্থাৎ শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে। তবে দিনে রোদ থাকতে পারে, ফলে ওই সময়ে শীত কিছুটা কমে আসবে।
একইসঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের এলাকা আরও বিস্তৃত হতে পারে। অর্থাৎ শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়া এলাকা রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর ও মৌলভীবাজারের আশপাশেও শীতল ওই আবহাওয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অধিদফতরের পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে রোদের দেখা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় শনিবার (২০ জানুয়ারি) দিনের তাপমাত্রা দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যায়। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য বেড়ে যাওয়ায় শীতের কষ্ট কিছুটা কমেছে। কুয়াশাও কিছুটা কমে আসায় শীতের অনুভূতিও কমেছে। দুই দিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় এ ধরনের আবহাওয়া থাকছে। দেশের যে চার জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা শনিবারও অব্যাহত ছিল।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় দিন ও রাতে যে সমান শীতের অনুভূতি ছিল, তা কিছুটা অস্বাভাবিক। শীতকালে দিনে রোদ থাকে, রাতে শীত নামে। এটিই স্বাভাবিক। আগামী কয়েক দিন এ ধরনের শীত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে অনেক এলাকায় তাপমাত্রা কমে গিয়ে শৈত্যপ্রবাহের এলাকা বাড়তে পারে।
এদিকে দেশের উত্তরাঞ্চল এবং সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ এলাকায় তীব্র শীতের কারণে জীবনযাত্রা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। রাত থেকে নামা ঘন কুয়াশার কারণে অনেক স্থানে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হয়েছে। বিশেষ করে মহাসড়ক এবং নদীপথে সমস্যা হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাবে, শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে নয় দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক স্থানে দিনের তাপমাত্রা দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী মঙ্গলবার থেকে দেশের আকাশে আবারো মেঘের আনাগোনা বাড়তে পারে। দেশের উপকূলীয় এলাকায় আবারো নামতে পারে বৃষ্টি। ওই বৃষ্টি দুই দিন থাকতে পারে। তারপর আবারো শীত বাড়তে পারে। দেশের বিভিন্ন স্থানে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।
সাধারণত জানুয়ারি হচ্ছে বছরের সবচেয়ে শীতলতম মাস। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। বছরের এ সময়টাতে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। ফলে রাতে তীব্র শীত থাকলেও দিনে রোদ ও শীত মিলেমিশে মাঝারি শীতের অনুভূতি থাকে। কিন্তু এবার রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসায় শীতের অনুভূতি বেশি। তবে মাসের বাকি দিনগুলোতে শীতের স্বাভাবিক অনুভূতি বজায় থাকবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।
ঘন কুয়াশার কারণে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে কোনো উড়োজাহাজ অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারেনি। এতে বাংলাদেশ বিমান, এয়ার অ্যাস্ট্রা, ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ারের ছয়টি উড়োজাহাজের ঢাকাগামী চার শতাধিক যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন। ঘন কুয়াশা কেটে যাওয়ায় পাঁচ ঘণ্টা পর বেলা ২টা ৪০ মিনিট থেকে বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা শুরু হয়।
আরও পড়ুন <> শীত নিয়ে দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অধিদফতর
ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামতে না পেরে দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এদিকে তীব্র শীতের কারণে রাজশাহী জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো দুইদিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোও একদিন বন্ধ থাকবে।
শনিবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী রোববার ও সোমবার (২১ ও ২২ জানুয়ারি) রাজশাহীর তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকবে। তাই মাউশির নির্দেশনা অনুযায়ী এ দুই দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকবে।
এদিকে, রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, রোববার শুধুমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। তাপমাত্রা যদি এমন থাকে তবে সোমবার নতুন করে ঘোষণা দেয়া হবে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় নয় দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস। কোনো জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে সেখানকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার জন্য সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। সে অনুযায়ী রাজশাহীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হল।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।