ছবি : সংগৃহীত
খিরা চাষে খরচ কম এবং এই ফসলে লাভ বেশি হওয়ায় সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন বগুড়ার চাষিরা। কৃষি বিভাগ জানায়, খিরা এখন অর্থকরি ফসল। হোটেল-রেস্টুরেন্টে ও সামাজিক অনুষ্ঠনে, বাসা-বাড়িতে সালাদ হিসেবে খিরার জুড়িভার।
এই ফসল চাষ করে অনেক কৃষকের ভাগ্য বদলে গেছে। ঈদ ও বিয়ে মৌসুমে খিরার চাহিদা বেড়ে যায়। তখন খিরার দাম বেড়ে যায়। খিরা রবি মৌসুমে বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ও পরিসংখ্যানবিদ ফরিদ উদ্দিন জানান, জেলায় এবার রবি মৌসুমে ২৬৭ হেক্টর জমিতে খিরার চাষ হয়েছে। রবি মৌসুম, খরিপ-১, খরিপ-২ মিলিয়ে জেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে খিরার চাষ হয়ে থাকে।
এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় খিরা ভালো ফলন হবে এমনটিই আশা করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মতলুবর রহমান। তা ছাড়া সামনে রমজান ও ঈদে খিরার চাহিদা বেড়ে গেলে কৃষকের বিনিয়োগের দ্বিগুন লাভবান হবে হওয়ার আশা করছেন তিনি।
শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলায় বর্তমানে ধান, আলু, সরিষা চাষের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে খিরা। জেলার অধিকাংশ উপজেলার গেলেই দেখা মিলবে খিরা’র চাষাবাদ। সারি সারি করে লাগানো প্রতিটি গাছে ধরে আছে খিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং খিরার ফলন ভালো হওয়ায় অনেকটা লাভের আশা করছেন নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা।
আরও পড়ুন <> মরিচ শুকানোয় ব্যস্ত বগুড়ার শ্রমিকরা
উপজেলার নামুইট উত্তর পাড়ার মৃত কাওছার আলীর ছেলে মাসুদ রানা প্রতি বছরের মতো এবছরও প্রায় তিন বিঘা জমিতে স্থানীয় ও উচ্চ ফলনশীল জাতের খিরার চাষ করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি মাথায় ডালি নিয়ে জমি থেকে খিরা তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।মাসুদ রানা জানান, নিজের জমি কম থাকার কারণে অন্যের জমি বছর পত্তন (ভাড়া) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের ফসল টমেটো, বেগুন, মরিচ খিরা চাষাবাদ করে আসছেন।এ বছর পৌষ মাসের দিকে তিন বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ১৫ হাজার বীজ বপন করেছিলেন তিনি। তিন বিঘা জমি পত্তন নিয়ে খিরা চাষে সব খরচ দিয়ে এ পর্যন্ত তার ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন খিরা তোলা শুরু করেছেন। তিন দিন পর পর খিরা তোলেন। তখন প্রতিচালানে পাঁচ-ছয় মণ খিরা উঠতো । এসময় বাজারে এক হাজার ৮০০ টাকা মণ বিক্রি করেছেন। এখন প্রায় প্রতিদিনই ১০ মণ করে খিরা উঠছে যা এখন বাজারে এক হাজার ২০০ টাকা মণ বিক্রি করছের। এ পর্যন্ত ছয়টি চালান তুলেছেন, ছয়টি চালানে প্রায় ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে এবং খিরার বাজার মূল্যে ভালো থাকে তাহলে শেষ পর্যন্ত তিন বিঘা জমি থেকে চার লাখ টাকার খিরা বিক্রি করার আশা করছেন তিনি।
কৃষি কর্মকর্তা শাহারুল ইসলাম বলেন, আমার ব্লকে অনেক কৃষকই রয়েছেন। রানা অন্যতম একজন কৃষক। তিনি প্রতিবছরই খিরার চাষ করে থাকেন। রানাকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, রানা অত্যন্ত সফল একজন কৃষক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর রানা খিরা চাষে লাভবান হতে পারবেন।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।