Apan Desh | আপন দেশ

সুন্দরবন প্রবেশে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:২৭, ১ জুন ২০২৪

সুন্দরবন প্রবেশে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

টানা তিন মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবনের দুয়ার। শনিবার (১ জুন) থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পর্যটক প্রবেশ, সাধারণ মানুষের চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরা। মূলত সুন্দরবনের নদী, খালে মাছ ও বনে প্রাণীদের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বন বিভাগ।

ইতোমধ্যেই গহীন সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরে এসেছেন সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলের বনজীবী হিসেবে পরিচিত জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়ালরা। তবে দীর্ঘ ৯২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বনজীবীরা। বনজীবীরা বলছেন, বন্ধের দিনগুলোয় তাদের জন্য সরকারি যে সহায়তা দেয়া হয় তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এজন্য সরকারি সহায়তার বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করেন তারা।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকত। ২০২২ সালে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এ নিষেধাজ্ঞা এক মাস বৃদ্ধি করে ১ জুন থেকে করা হয়েছে। সেই থেকে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস বনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন>> সুন্দরবনে মৃত হরিণের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ 

বন বিভাগ জানায়, সুন্দরবনে প্রায় ২৮৯ প্রজাতির স্থলজ প্রাণী বাস করে। এছাড়া আছে প্রায় ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর, বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ ২১৯ প্রজাতির জলজ প্রাণী। বনের নদী ও খালে নৌযান চলাচল করলে মাছের ডিম ছাড়তে সমস্যা হবে- তাই সব ধরনের নৌযানও বন্ধ থাকবে।

বনজীবীরা জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের সংকেত শুনে ঝড়ের আগেই তারা সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরেছিলেন। এরপর আর বন বিভাগ থেকে বনে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করায় বিপাকে পড়েছেন সুন্দরবনের ওপর জীবিকা নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষ।

এ তিন মাসে তাদের কোনও রোজগারের পথ থাকবে না। শুধু সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জীবন নির্বাহের জন্য সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল।

গাবুরা ইউনিয়নের চাঁদনিমুখা এলাকার রইসউদ্দিন বলেন, সুন্দরবনে মাছ, কাঁকড়া ও মধু আহরণ করেই আমাদের সংসার চলে। তিন মাস প্রবেশ বন্ধ থাকবে। এক সপ্তাহ আগে ঝড়ের সংকেত শুনে বন থেকে বাড়িতে ফিরেছি। খুব বেশি মাছ ধরতে পারিনি। মঙ্গলবার ঝড় থেমে গেলেও ফরেস্ট স্টেশন থেকে বনে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছে না। সামনের তিন মাস বন্ধের সময় সংসার চালানোর মতো সঞ্চয় নেই। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

তিনি বলেন, সরকারিভাবে যাদের জেলে কার্ড রয়েছে তাদের দুই ধাপে ৫৬ কেজি করে চাল সহায়তা দেয়া হয়। সেটিও অনেক প্রকৃত জেলে পান না।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির বলেন, সুন্দরবনে প্রবেশ তিন মাস বন্ধ থাকবে। তবে এ সময়ে জেলেদের মৎস্য অধিদফতরের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। তালিকা প্রণয়নে কোনও স্বজনপ্রীতি করা বা জেলে নয় এমন কাউকে তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ পেলে তাদের বরাদ্দ বাতিল করা হবে। মৎস্য অধিদফতরকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হবে।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়