ছবি: সংগৃহীত
মেহেরপুরের তিন উপজেলার বিস্তীর্ণ কৃষিজমি টানা বৃষ্টির কারণে পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ১৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হয়। এ কারণে সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলার ৩৩টিরও বেশি গ্রাম ও ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এতে মাছের পুকুর, আউশ ও আমন ধান, ক্ষীরা ও কাঁচা মরিচের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পলি পড়ে ভরাট হয়ে যায় নদী। তাই দীর্ঘদিন নদী খনন না করায় পানি নিষ্কাশনে ব্যাঘাত ঘটেছে। যার ফলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সদর উপজেলার চান্দবীল, আমঝুপি, বারাদি, শ্যামপুরসহ বেশ কিছু গ্রাম। এছাড়া গাংনী উপজেলার বামুন্দী, কাজীপুর ও মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান, কেদারগঞ্জ। আরও বেশ কিছু এলাকার ফসলি জমিতে ব্যাপক জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার তথ্য মতে, মেহেরপুরে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ৬৫.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরপর সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সর্বশেষ ৮৭.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরের হিসেবে, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার ভারী বৃষ্টি হিসেব করে। ৮৮ মিলিমিটারের চেয়ে বেশি হলে তা অতি ভারী বৃষ্টি হিসেবে ধরা হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, জেলায় আউশ ধান চাষ হয়েছে ২০ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে। ক্ষীরার চাষ হয়েছে ৮ হাজার হেক্টরে। কাঁচা মরিচ চাষ হয়েছে ১০ হাজার হেক্টরে। এর মধ্যে ৬ হাজার হেক্টর আউশ ধান। ৩ হাজার হেক্টর ক্ষীরার ক্ষেত। ৬ হাজার হেক্টর কাঁচা মরিচের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
অন্যদিকে, টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ পড়ে যাওয়ায় জেলার বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করতে কাজ করছে। ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে।
এ দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষ। তাদের অনেকেই প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট ফাঁকা। ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, প্রাথমিকভাবে কৃষি অধিদফতরকে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি ওএমএসের মাধ্যমে কম দামে চাল বিতরণও চলছে।
আপন দেশ/অর্পিতা
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।