শীতের কুয়াশা মাড়িয়ে কাজের সন্ধানে মানুষ। ছবি-আপন দেশ
উত্তরের হিমপ্রবণ জেলা পঞ্চগড়। অন্যান্য জেলার তুলনায় শীতের আগমন ঘটে এ জেলায়। ঋতুচক্রে শীতকাল আসার আগেই হেমন্তে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। দিন দিন নিম্নমুখী তাপমাত্রায় বাড়তে শুরু করেছে শীতের অনুভব। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হিমবাতাসে অনুভব হচ্ছে শীত। ঘাসের শিশির মাড়িয়ে ক্ষেতে ছুটতে দেখা যায় চাষিদের। জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন নিম্ন আয়ের মানুষদের কাজে যেতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা বলছেন, উত্তরের এ জেলাটি হিমপ্রবণ জেলা। হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা সন্নিকটে থাকায় অক্টোবর থেকেই হিমালয়ের হিমবায়ু প্রবাহিত হলে শীতের আমেজ শুরু হয়। বর্তমানে দিন দিন শীতের মাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। সন্ধ্যার পর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে শীতের অনুভূতি। রাতভর নিতে হয় কাথা কিংবা পাতলা কম্বল। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকেই জানুয়ারী পর্যন্ত দাপট থাকে শীতের। এ কালের আমেজে যুক্ত হচ্ছে নবান্নের আমেজ। ঘরে ঘরে বিভিন্ন পিঠেপুলি ও শহর-গ্রামের বিভিন্ন হাটবাজারে মিলতে শুরু করেছে শীতকালিন বিভিন্ন পিঠাপুলি।
উত্তরের এ জেলাটি পর্যটন অঞ্চল হওয়ায় বিশেষ আকর্ষণ কেড়েছে তেঁতুলিয়া হতে ইন্ডিয়া-নেপালের সুউচ্চ হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা। গত অক্টোবর থেকেই পর্যটকের ঢল নেমেছে এ জেলার তেঁতুলিয়ায়। বর্তমানে আবহাওয়ার কারণে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা না গেলেও আগামী শীতের পরশে সিক্ত হচ্ছেন পর্যটকরা। তারা বলছেন, পঞ্চগড় যে শীতের এলাকা, এ সময়টাতেই শীত উপভোগ করতে পারবো ভাবতে পারিনি। পাহাড় দেখতে এসে পাহাড়ের শীতল পরশ অনুভব করতে পারছি।
চা ও পাথর শ্রমিক আরশেদ আলী, জাহেদ আলীসহ কয়েকজন জানান, ঠান্ডা পড়ে গেছে। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত শীত লাগছে। সকালে কাজে বের হলে ঠান্ডা লাগলেও করার কিছু নেই। জীবিকার তাগিদে কাজে যেতে হয়।
এদিকে রাতে শীত ও দিনে গরম হওয়ায় দুই রকম আবহওয়ার কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। জেলার আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা সবাইকে সতর্ক থাকা ও শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার সঙ্গে যত্ন নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন।
পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, দিন দিন তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। ভোরে কুয়াশায় জড়াচ্ছে প্রকৃতি। রাতে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। আজ রোববার ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এখন দিন যত যাবে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।