ফাইল ছবি
আমার এলাকায় আমিই প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বললেও আমি শুনবো না। কাউকে গোনার টাইম নাই। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কুটুক্তি ও আওয়ামী লীগকে গালমন্দকারী নোয়াখালী সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিনকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার ও সাংগঠনিক শাস্তির দাবি জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ বরাবর আবেদন দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর এই লিখিত আবেদন করেন দাদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক আবদুল মতিন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম আবেদনটি আমলে নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
গত ১৩ আগস্ট সকাল থেকে সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিনের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। এতে তাকে বলতে শোনা যায়, আমার এলাকায় আমিই প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বললেও আমি শুনবো না। কাউকে গোনার টাইম নাই।
দাদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক আবদুল মতিন জানান, ২০১১ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন সাবেক ইউপি মেম্বার জহির উদ্দিন। তিনি বিভিন্ন দলের লোকজন নিয়ে এলাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন। এদের দিয়ে এলাকায় হামলা, দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছেন। জহির মেম্বার বাহিনীর সদস্য রাসেল ওরফে কালা সম্প্রতি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিনের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুক পোস্ট করেন। এতে রাসেলকে ‘গুপ্তচর’ আখ্যা দিয়ে এলাকা ছাড়া করেন জহির মেম্বার। পরে রাসেল এলাকায় ফিরতে জহির মেম্বারকে ফোন দেন।
আরও পড়ুন: কিশোরীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় যুবলীগ নেত্রী বহিষ্কার
তখন জহির মেম্বার বলেন, তোমার জন্য অনেকে ফোন দিয়েছে। আমি কারও কথা শুনি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেও আমি শুনবো না। আমার এলাকায় আমিই প্রধানমন্ত্রী। কাউকে গোনার টাইম নাই। তবে তুমি নুরুল আমিনকে (বিএনপি নেতা) কোপাতে পারলে এলাকায় ফিরতে পারবা। আমি তোমার নিরাপত্তাসহ পুরস্কারও দেবো। এছাড়াও ওই অডিওতে আওয়ামী লীগ এবং দলের একাধিক নেতাকে জহির উদ্দিন গালমন্দ করতে শুনা গেছে। যা পরের দিন বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হয়েছে। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে এরুপ কুটুক্তিমূলক বক্তব্য শুনে আমি এবং আমাদের দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সংক্ষুব্ধ হই। তাই দলীয় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে জহির উদ্দিনকে দলীয় পদপদবী থেকে বহিস্কারসহ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
তবে কথোপকথনের বিষয়টি অস্বীকার করেন আওয়ামী লীগ নেতা জহির উদ্দিন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কথোপকথনের ব্যক্তি আমি নই। রাসেলকেও আমি চিনি না। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এডিট করে আমার কণ্ঠ বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।
স্থানীয় দাদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান শিপন বলেন, কথোপকথনের কণ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা জহির উদ্দিনের। সে আওয়ামী লীগের নাম বিক্রি করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এ ঘটনার জন্য সেই রাসেলের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। জহিরের ভয়ে একালা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে রাসেল।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম দাদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে লিখিত আবেদন গ্রহণের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আবেদনটি গ্রহণের পর উপজেলা আওয়ামী লীগকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আপন দেশ/প্রতিনিধি/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।