ছবি: আপন দেশ
পঞ্চগড়ে ইমাম মসজিদের সাহেবের কাণ্ডে সাধারণ মুসুল্লিরা হতবাক। জেলা তেঁতুলিয়ায় মালিগছ গ্রাম থেকে অভিনব কৌশলে প্রায় ৪০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছেন। ইমাম আতিকুর রহমান। প্রতারণার শিকার লোকজন ওই ইমামের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও জুতা মিছিল করেছে।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের মালিগছ এলাকায় ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে অন্তত ২০টি পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী অভিযুক্ত ইমাম আতিকুর রহমান নাটোর জেলার সদর উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামের মোজাহার আলীর ছেলে। তবে সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে কাজ করছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
তারা জানান, গত বছর ঐতিহ্যবাহী মালিগছ বামনপাড়া জামে মসজিদের জন্য আতিকুর রহমানকে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ওই সময় তিনি পরিচয় গোপন রেখে ভুয়া পরিচয়ে ইমামের চাকরি নেন। কিছুদিন পর তিনি ইমামতির পাশাপাশি ঠিকাদারি ব্যবসা ও অসুস্থ্যতার কথা বলে সুদের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দেড় বছরে গ্রামের বিভিন্নজনের থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা ফেরত দেয়ার জন্য চাপ দিলে গত ৪ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে আতিকুর রহমান এলাকা থেকে পালিয়ে যান।
ভুক্তভোগী আনোয়ারুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, মালিগছ বামনপাড়া মসজিদের আমি একজন মুসল্লি। গত বছরের ৩০ জুন আমাদের মসজিদে আতিকুর রহমানকে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি এ এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করেন এবং ‘মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্স-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কথা বলে গোপনে অনেক মানুষের থেকে টাকা ধার নেন। কিন্তু যার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, তা অন্যজনকে জানাতে নিষেধ করেছেন। এভাবে তিনি প্রায় ১৮/২০ জনের কাছ থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা লাভ দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেন। আমার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়েছেন তিনি।
ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি তাকে ধার হিসেবে ৩ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে টাকা চাইতে গেলে জানান, সেপ্টেম্বরে আমার বিল হবে, তখন দিয়ে দিব। এখন দেখি গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে সে পালিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী শাহিনা বেগম বলেন, হুজুর আমার বাসায় ভাড়া থাকতেন। আমার পরিবার থেকে তিনি ২ লাখ ২১ হাজার টাকা ধার নিয়েছেন। এখন আমার পরিবার আমাকে টাকার জন্য খুব চাপ দিচ্ছেন।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের বলেন, এই ইমাম এমন প্রতারক হবে তা আমরা জানতাম না। তিনি আমাদের মসজিদের ইমামতি, বিভিন্ন মাহফিলে ওয়াজ করেছেন। তা দেখে আমরা খুব বিশ্বাস করেছিলাম। সে আমাদের এখানে বিভিন্নজনের কাছে টাকা নিয়ে এভাবে রাত ৩/৪ টার সময় উধাও হয়ে যাবে, তা ভাবতে পারিনি। শুনেছি, সে বগুড়াতেও এরকম এক এলাকার মানুষের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আমরা এ প্রতারক ইমামকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তা তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।