ফাইল ছবি
রাজধানীর হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নয়টি গেটের নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কুয়েতগামী বিমানে উঠা জুনায়েদ মোল্লা (১২) পাইলট হতে চায়।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী ইমরান মোল্লার প্রথম পক্ষের ছেলে জুনায়েদ। বেশ কয়েকবছর আগে মা অন্যত্র চলে যাওয়ার পর সৎ মায়ের কাছে বড় হয় সে। তাকে ভর্তি করা হয় উপজেলার উজানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায়। তবে বিভিন্ন সময় বাড়ির কাউকে না বলে বাইরে চলে যেত জুনায়েদ।
জোনায়েদ জানায়, গত রোববার সে বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে ইজিবাইকে করে মুকসুদপুর যায়। সেখান থেকে বাসে উঠে চলে যায় ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে বসুন্ধরা হয়ে যায় এয়ারপোর্টে। পরে উঠে পড়ে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের (কেইউ-২৮৪) রাত ৩টা ১০ মিনিটের একটি ফ্লাইটে। প্রায় এক ঘণ্টার মত বিমানের সিটে বসে থাকার পর জুনায়েদ প্লেনের ভেতরে করিডোরে হাঁটাচলা করছিল। এ সময় কেবিন ক্রু জুনায়েদকে সিটে বসার পরামর্শ দেন। তখন শিশুটি একটি সিটে বসে পড়ে। এক পর্যায়ে জুনায়েদ যেই সিটে বসেছিল পাশের সিটের যাত্রী শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে বসতে বলে। কিন্তু শিশুটি তার বাবা-মায়ের বিষয়ে কোনোকিছু বলতে পারেনি।
এদিকে বিমানে উঠতে পেরেও উড়তে না পারার আক্ষেপ আছে তার। জোনায়েদ বলে, বিমানে উড়তে পারলে ভালো লাগতো, বড় হয়ে একদিন বিমানে উড়ব।
জুনায়েদ আরও বলে, এখন থেকে ঠিকভাবে পড়াশোনা করব। পড়লেখা করে বড় হয়ে একদিন পাইলট হব। আর সেদিন পরিবারের সবাইকে নিয়ে বিমানে উড়ব।
আরও পড়ুন <> আগেও একাধিকবার প্লেনে ওঠার চেষ্টা করেছে জুনায়েদ
ঢাকায় কেন গিয়েছিলে জানতে চাইলে জুনায়েদ বলে, পড়াশোনার জন্য টাকা চাইলে বাড়ি থেকে মারত। তাই বিভিন্ন সময়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতাম। রোববার একটি কারণে আমার বাবা আমাকে মারধর করে। পরে আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রথমে মায়ের (আপন মা) কাছে যাই। কিন্তু মা আমাকে বসতেও বলেনি। পরে সেখান থেকে ঢাকায় চলে যাই। ঢাকা পৌঁছে প্রথমে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করি। পরের দিন সোমবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা থেকে এয়ারপোর্টে যাই। পরে সেখানে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে প্লেনে উঠে বসে পড়ি। আমি কোনো কিছু না বুঝেই শখের বসে বিমানে উঠে পড়ছিলাম। বিমানে উঠার পর আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। এজন্য প্লেনের মধ্যে হাঁটাচলা করেছিলাম। পরে আমাকে প্লেন থেকে নামিয়ে প্রথমে একটি অফিসে পরে থানায় পাঠানো হয়।
জুনায়েদের বাবা ইমরান মোল্লা বলেন, জুনায়েদ চলে যাওয়ার পর খোঁজাখুঁজি করা হয় বিভিন্ন স্থানে। পরে এয়ারপোর্ট থানা থেকে ফোন আসার পর আমরা তার খোঁজ পাই। পরে আমার ভাই ঘটনাস্থলে গিয়ে জুনায়েদকে পুলিশের কাছ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়ি এসে সকালে আবার পালিয়ে যায় জুনায়েদ। খুঁজে বের করে পায়ে শিকল দিয়ে তালাবন্ধ করে আটকে রাখা হয়। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার শিকল খুলে দেয়া হয়।
আপন দেশ/আরএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।