Apan Desh | আপন দেশ

পদ্মার ভাঙন আতঙ্কে জাজিরা পাড়ের মানুষ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:৩০, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২

আপডেট: ১৩:০৫, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২

পদ্মার ভাঙন আতঙ্কে জাজিরা পাড়ের মানুষ

ফাইল ছবি

শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা পাড়ের মানুষ নদী ভাঙনের আতঙ্কে আছেন। অনেকে বাপ-দাদার ভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। ভাঙনের শিকার হয়ে অনেকে খোলা জায়গায় বসবাস করছেন। জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

জানা গেছে, জাজিরায় পদ্মা সেতু জিরো পয়েন্ট থেকে বড়কান্দি পর্যন্ত নদী ভাঙছে। গত কয়েক দিনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে দুই থেকে তিন কিলোমিটার জায়গা। এতে কমপক্ষে ৪০টির বেশি ঘর অন্য জায়গা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে পালেরচরের ১ নং ওয়ার্ডের ৩ শতাধিক পরিবার। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে মসজিদ ও স্কুল। সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিদ্যুতের খুঁটি। সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও গাছপালা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

পালেরচরের বাসিন্দা আসমা বানু বলেন, জমিতে ধান ছিল। পেকেও গিয়েছিল। হঠাৎ করে রাতে নদীর ভাঙনে সেই ক্ষেত ডুবে গেছে। ঘর সরাতেও সময় লাগছে। তাই ক্ষেতের দিকে নজর দিতে পারেনি। এখন আমার ফসলও নদীতে ধানক্ষেত নদীতে।

মরিয়ম আক্তার নামে আরেকজন বলেন, আমি বুড়ো মানুষ। আমার ঘরের লোকও বুড়ো। কে করে দেবে আমাদের কাজ। এই ছোট একটি ঘরে আমরা দুজন থাকি। হয়তো আজ রাতে থাকতে পারব না।

আনোয়ার মিয়া নামে একজন বলেন, শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ নদীভাঙনের শব্দে ঘুম থেকে ওঠে ঘর থেকে বেরিয়ে যাই। ঘরের সবকিছু খুলে ফেলেছি। শুধুমাত্র খামগুলো রয়ে গেছে। এখানে একটি স্থায়ী বেড়িবাঁধ চাই, এ ছাড়া কিছুই চাই না।

আলিম উদ্দিন নামে একজন বলেন, আমরা এখানে স্থায়ী বেড়িবাঁধ চাই। দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙার কারণে এই বেড়িবাঁধটি আমরা চেয়ে আসছিলাম। বর্ষার সময় শুধু জিও ব্যাগ ফেলানো হয়। এ ছাড়া কোনো কিছুই করা হয় না। আমার সব নদীতে নিয়ে গেছে। আমি আজ এখানে থাকি, কাল ওখানে থাকি।
কাথুরিয়া গ্রামের হযরত আলী, রইচউদ্দিন, মামুন, নিপা, সামসুল হক বলেন, ‘কয়েক বছরের ভাঙনে আমাদের ফসলি জমি, গাছপালা ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই এক সপ্তাহের তীব্র ভাঙনে শেষ সম্বল বাপ-দাদার ভিটেটুকু হারাতে বসেছি।

পালেরচর ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মোহাম্মদ লিটন বলেন, আবার কাথুরিয়া এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন অব্যাহত আছে।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহেল বলেন, কাথুরিয়া এলাকায় আবারো ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০টি পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবীব বলেন, পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে আমরা জিও ব্যাগ ফেলছি। এ ছাড়া এ বছর জাজিরার পালেরচর ও বড়কান্দি এলাকায় নদীভাঙন রোধে কাজ চলছে। এরই মধ্যে আমরা একটি প্রকল্প করে এটি অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছি। এটি পাস হলেই ব্লক ও জিওব্যাগ ফেলে স্থায়ী একটি বেড়িবাঁধের কাজ শুরু করব।


আপন দেশ ডটকম/আরইউ

 

 

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়