জলদস্যুদের গ্রেফতার-বিচার দাবিতে সুবর্ণচরে বিক্ষোভ
নোয়াখালী: মেঘনা নদীতে মাছ ধরার খেপ দখলকে কেন্দ্র করে জলদস্যুদের গুলিতে ২ জেলে নিহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন ৮জন। এদিকে জলদস্যুদের গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠেছে নোয়াখালীর উপকূল।
এ ঘটনায় শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সুবর্ণচর উপজেলার মঞ্জু চেয়ারম্যান বাজারে জলদস্যু বাহিনীর প্রধান কেফায়েত উল্যাসহ তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে উপকূলের বাসিন্দারা।
এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ চৌধুরী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হোসেন টুটুল, সাবেক ইউপি সদস্য হাসান খোকন, যুবলীগ নেতা আমির হোসেন রাজা মিয়াসহ পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধন থেকে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দ্বীপ অংশে জেলেদের মাছ ধরার ট্রলারে গুলি চালায় জলদস্যু কেফায়েত বাহিনী। এতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের নাছির আহমদের ছেলে আব্দুর রহমান (৪০) ও একই উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ ইসমাইল (৪২) নিহত হন। তাদের মরদেহ বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ জেলেরা হলেন- সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামের ভুলু মাঝির ছেলে জিল্লুর রহমান (৩২) ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরতরাব আলী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে নুর আলম মিয়া (৩৫)। আর অপহৃত জেলেরা হলেন- রাজু (১৩), জুয়েল (২৬), আব্দুর রহমান (২২), হোসেন (৪০), ইসমাইল (৪০)।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, সুবর্ণচর উপজেলার মাইন উদ্দিন মাঝি ও অলি মাঝি মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দ্বীপ অংশে দীর্ঘদিন যাবত মাছ শিকার আসছেন। কিন্তু কিছুদিন যাবত মেঘনা নদীর মাছ শিকারের এই খেপ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে জলদস্যু কেফায়েত বাহিনী। বুধবার সন্ধ্যার দিকে ওই বাহিনী খেপ দখল করতে জেলেদের জাল কেটে দেয়। খবর পেয়ে দুটি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সেখানে যায় ভুক্তভোগী জেলেরা। একপর্যায়ে কেফায়েত বাহিনীর সদস্য আলতাফ, নুরউদ্দিন ও জুয়েল সন্দ্বীপ কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মহিউদ্দিনের সহযোগিতায় জেলেদের দুটি মাছ ধরার ট্রলারে দুই দফায় হামলা চালিয়ে মাছ, জাল, ট্রলারসহ কোটি টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
এ সময় জলদস্যুরা গুলিতে ২ জেলে গুলিবিদ্ধসহ ৮ জন আহত হন। তাদের মধ্যে ২ জনকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই সময় জলদস্যু বাহিনী ৫ জেলেকে অপহরণ করে। নিহত ২ জেলেকে কোস্টগার্ড জলদস্যু সাজানোর পাঁয়তারা করে। এদিকে এই ঘটনায় মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।