প্রেস ব্রিপিংয়ে বক্তব্য রাখছেন এসপি মো. শহিদুল ইসলাম
নোয়াখালী: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে যৌতুক না পেয়ে অন্তঃসত্বা স্ত্রী রহিমা আক্তার সুমিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর শৌচাগারে ফেলে পালিয়ে যান স্বামী মো. আবু ইউসুফ। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল ইসলাম।
রোববার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় সোনাইমুড়ী থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন, চাটখিল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নিত্যানন্দ দাস এবং সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী।
শনিবার (৭ অক্টোবর) সাতক্ষীরা শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাজিবের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আবু ইউছুফকে গ্রেফতার করে। পরে রাতে তাকে নিয়ে সোনাইমুড়ী থানায় পৌঁছায় পুলিশ। গ্রেফতার আবু ইউছুফ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর গ্রামের মাওলানা আবু মুছার ছেলে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, আবু ইউছুফ একজন পেশাদার চোর। তিনি বিভিন্ন মসজিদে ঢুকে মুসল্লিদের মুঠোফোন চুরি করতেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে নোয়াখালীর চাটখিলের তরুণী সুমির সঙ্গে পরিচয় হয় ইউছুফের। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে গত এপ্রিল মাসে বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়ে সুমি পালিয়ে যান। দুইদিন পর বাড়িতে ফোন করে জানান, তিনি কুমিল্লা আছেন, ভালো আছেন। এরপর গত চার-পাঁচ মাস আগে সুমি ইউছুফকে নিয়ে চাটখিলের গ্রামের বাড়িতে এলে দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের ফের বিয়ে দেয়া হয়।
ইউছুফের বরাত দিয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত মাসে তিনি (ইউছুফ) সোনাইমুড়ী পৌর শহরের দুশ্চিম পাড়া পৌরসভা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত ১ অক্টোবর সকালে তিনি বিদেশে যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। কিন্তু স্ত্রী তাতে রাজি হননি। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তর্কবির্তক ও বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে আবু ইউছুফ সুমিকে থাপ্পড় মারলে তার নাক-মুখ দিয়ে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তখন তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা আরও বেড়ে যায়। এ সময় ইউছুফ স্ত্রীর গলায় থাকা ওড়না পেছন দিয়ে পেচিয়ে ধরলে এক মিনিটের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার ইউছুফ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন স্ত্রী সুমির মৃত্যুর পর তিনি ওই দিন মেঝেতে মরদেহ ফেলে রেখে বাসার দরজায় তালা ঝুলিয়ে ঢাকায় চলে যান। পরদিন তিনি ফের বাসায় আসেন এবং স্ত্রীর মরদেহকে টেনে হিঁছড়ে বাথরুমে নিয়ে লুকিয়ে রেখে দরজা বন্ধ করে বাসায় তালা দিয়ে সাতক্ষীরা পালিয়ে যান।
পুলিশ সুপার আরও জানান, আসামি আবু ইউসুফ একজন পেশাদার চোর। বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসল্লিদের মোবাইল ফোন চুরি করা তার পেশা ও নেশা। তার হেফাজত থেকে ৯টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।