হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন
বকশীগঞ্জ (জামালপুর): বকশীগঞ্জে গৃহবধূ গোলাপফুল বেগমকে (২৩) পরিকল্পিত ভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বজনরা। তাই হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের গোপালপুর বাজারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা। বকশীগঞ্জ-সারমারা আঞ্চলিক সড়কে এলাকাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান মাষ্টার, নিহতের মা হাসিনা বেগম, আল আমিন ,মিনারা বেগম, নুরেজা বেগম, হেলাল মিয়া, নুর আলম ও বিল্লাল হোসেন প্রমুখ। এই কর্মসূচিতে প্রায় দুই সহস্রাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ অক্টোবর উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের নীলেরচর গ্রামে শ্বশুর বাড়ির রান্নাঘর থেকে গোলাপ ফুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকেই স্বামীসহ ওই বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছেন। গোলাপফুল ধারারচর ভাটিপাড়া গ্রামের মোতালেব মিয়ার মেয়ে।
নিহতের বাবা মোতালেব মিয়া জানান, গত প্রায় ৫ বছর আগে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের নীলেরচর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে ইয়াছিন মিয়ার (৩০) সঙ্গে বিয়ে হয় গোলাপফুল বেগমের। তাদের সংসারে তিন বছরের একটি ছেলে আছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতো ইয়াছিন মিয়াসহ তার পরিবারের লোকজন। এ অবস্থায় মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময়ে প্রায় দুই লাখ টাকা যৌতুক দেন তিনি। এরপরও নির্যাতনের মাত্রা থামেনি, বরং দিনদিন নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। গত কিছুদিন আগে একটি হত্যা মামলার আসামি হয়ে কারাগারে যায় ইয়াছিন মিয়ার ছোট ভাই সুজন মিয়া। সেজন্য গোলাপফুলকে আবারো যৌতুকের জন্য চাপ দেয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন গোলাপফুলকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে তারা গোলাপফুল বেগম আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করে। এ ঘটনার খবর পেয়ে রান্না ঘর থেকে গোলাপফুল বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ।
মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান মাষ্টার বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, কিন্তু এটাকে আত্মহত্যা বলে চালানো হচ্ছে। নিহতের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই আসল রহস্য বের হয়ে আসবে। হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার চান তিনি।
গোলাপফুল বেগমের মা হাসিনা বেগম বলেন, যৌতুক দিতে না পারায় তারা আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। আমি মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচার চাই। হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে, তবে মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।