ছবি: আপন দেশ
ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেনটির পানা স্টেশন ছাড়ার কথা ৮টা ২০ মিনিটে। কিন্তু শনিবার রাজশাহীর উদ্দেশ্যে এ স্টেশন ছেড়েছে সকাল সাড়ে ৯টায়। আবার রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটিও ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে এক ঘণ্টা দেরিতে পোঁছে। একইভাবে ঈশ্বরদী বাইপাস হয়ে উত্তরাঞ্চলে চলাচলকারী সকল ট্রেনই চলছে ধীর গতিতে। এতে প্রত্যেকটি ট্রেনের ১ থেকে ৮ ঘণ্টা শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
রেল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নাশকতার আশঙ্কায় ট্রেনের গতি কমিয়ে পরিচালনার নির্দেশনা মানতেই এমনটি হচ্ছে। দিনে ৯০ কি.মি গতিতে চলাচলকারী ট্রেনের গতি কমিয়ে ৭৫ কি.মি ও রাতে ৬০ থেকে ৭০ কি.মি গতিতে চলাচলকারী ট্রেনের গতি ৫০ কি.মি-তে নামিয়ে আনা হয়েছে।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ স্টেশন হয়ে চলাচলকারি প্রতিটি ১ ঘন্টা থেকে ৮ পর্যন্ত বিলম্বে চলাচল করছে। সবচেয়ে বেশি বিলম্বে চলছে চিলাহাটি-ঢাকারুটে চলাচলকারী চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন। এ ট্রেন সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকলেও এটি সন্ধ্যা ৬টা ৪৪ মিনিটে প্রবেশ করে। এছাড়াও ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে যাত্রা বিরতি ১০টা ২১ মিনিটে থাকলেও স্টেশনে আসে ১টা ৫০ মিনিটে, একতা এক্সপ্রেস ৩ ঘন্টা, পদ্মা এক্সপ্রেস ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট, বনলতা এক্সপ্রেস ২ ঘন্টা, দ্রুতযান ৩ ঘন্টা, নীলসাগর এক্সপ্রেস ৪ ঘন্টাসহ রংপুর এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেসসহ সকল ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে।
ঈশ্বরদী জংসন স্টেশন গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন ঈশ্বরদী জংসন স্টেশনে ১টা ২০ মিনিটে যাত্রা বিরতি। এ ট্রেন বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে স্টেশনে প্রবেশ করে। খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ১১টায় যাত্রা বিরতি থাকলেও ২টা ৩০ মিনিটে স্টেশনে প্রবেশ করে। চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন ২টায় যাত্রা বিরতি থাকলেও ট্রেন স্টেশনে আসে ৬ টা ৩ মিনিটে। ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট। এছাড়াও সীমান্ত এক্সপ্রেস, ঈশ্বরদী কমিউটার, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বিলম্বে চলাচল করছে।
ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন মাষ্টার সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে। সবচেয়ে বেশিবিলম্বে চলছে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন। এটি প্রায় ৮ ঘন্টা বিলম্বেও চলছে।
ঈশ্বরদী জংসন স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মহিবুর ইসলাম বলেন, রেলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিদের্শনা অনুযায়ী প্রতিটি ট্রেনের গতি কমানোর ফলে প্রতিটি ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারি পরিবহণ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ এ প্রতিবেদককে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ট্রেনে নাশকতা বেড়ে যাওয়ায় সকল ট্রেনের গতি কমিয়ে দেয়া হয়েছে। দিনে ব্রডগ্রেজ লাইনে ট্রেন ৯০ কি:মি: গতিতে চলাচল করে এটি কমিয়ে ৭৫ কি:মি: করা হয়েছে। রাতে ৬০ থেকে ৭০ কি:মি বেগে চললেও এখনতা ৫০ কি:মিঃ গতিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। এতে প্রতিটি ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে। এছাড়াও রাতের ট্রেনে চলাচলে ‘পাইলটিং পদ্ধতি’ চালু করা হয়েছে। অর্থাৎ রাতের একটি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কয়েক মিনিট আগে আরেকটি ট্রেনের লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ওই রেলরুটে পাঠানো হয়। এ রেল ইঞ্জিনের কাজ হলো ট্রেন লাইন নিরাপদ রয়েছে কিনা সেটি পরীক্ষা করা। এটি সপ্তাহখানেক ধরে চলছে।
তিনি জানান,আজ রাতেই হয়তো ট্রেন পাইলটিং পদ্ধতি শেষ হয়ে যাবে। তাছাড়া ইতিমধ্যে দিনে চলাচলকারী ট্রেনের গতিবেগ কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। দু’চারদিনের মধ্যে রাতের ট্রেনের গতি বাড়ানো হবে। এতে শিডিউল বিপর্যয় থাকবেনা।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।