ছবি : আপন দেশ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার ধরন্তী সংলগ্ন ‘কইচ্চা’ বিলের জলমগ্ন ও নিচু ধানী জমির মাটি প্রকৃত মালিকের অনুমতি ছাড়াই বিক্রি করে দিচ্ছে একটি চক্র। জমিগুলোর প্রকৃত মালিক নোয়াগাঁও গ্রামের জারুল্লাহাটির অধিবাসীরা।
চক্রের সদস্যরাও একই এলাকার। তারা এলাকার নেতৃস্থানীয় ও ভূমিখেকো প্রকৃতির। এতে করে জমির মালিকরা ভীত-সন্ত্রস্ত। তারা অবৈধ ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি তুলছে বছরের নানা সময় জলমগ্ন থাকা ওইসব ধানী জমি থেকে। এটি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় জলমহাল আইনের পরিপন্থী বলে জানান জমির মালিকরা।
এ বিষয়ে বাধা দিলে চক্রটি ওই বিলের জমির একাধিক জমির মালিককে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। এমনকি চাঁদা দাবি ও মারধর করা হয়েছে বলে মিথ্যা মামলাও দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন, শামসু উদ্দিন ওরফে মাসুদ মিয়া, ইলিয়াস মিয়া, আবু ছালেক মৃধা, বাদল মৃধা, শিশু মিয়া, জুরু মিয়া, শাহজাহান মিয়াসহ অনেকে।
এই বিলে জমি থাকা শহীদ উল্লাহ সোহেল বলেন, তারা ভূমির প্রকৃত মালিকের অনুমতি ছাড়া জমি থেকে ভেকু মেশিনের মাধ্যমে মাটি তুলছেন। আমরা একাধিকবার বাধা দিয়েছি। তারা আমিসহ এলাকার নিরীহ ভূমির মালিককে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন এবং এখনো দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। পুলিশ গেলে ভেকু মেশিন রেখে তারা পালিয়ে যান। পরে অসৎ উদ্দেশে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় চাঁদা দাবির অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন। এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করেন। নিজেরাও অসৎ ও ঝগরাটে মনোভাবের। আমরা শুধু চাই মাটি তোলা বন্ধ হোক।
অভিযুক্ত শামসু উদ্দিন ওরফে মাসুদ মিয়া বলেন, এলাকার ১০ জনের জমির মাটি তাদের অনুমতি পেলেই তুলব, না হয় তুলব না। আর যদি সমাজের মানুষ বসে এ বিষয়ে সুরাহা করে তবে ভালো হয়। ভেকু মেশিনে জলমহালের মতো জমির মাটি তোলা অবৈধ এটি জানালে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। মিথ্যা মামলার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, অপরপক্ষ মামলা করেছে; তারা পরে করেছেন।
যে জমির মালিক মাটি তোলার অনুমতি দিবেন না তার মাটি তোলা হবে না বলে জানান তিনি। জলমগ্ন জমির মাটি ভেকু মেশিনের তোলার সময় পৃথক করবেন কীভাবে- এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুবেল বলেন, থানায় অভিযোগ আসলে পুলিশ মাটি কাটা হচ্ছে কিনা দেখতে যায়। পরে মাটি তোলা বন্ধ হয়। বিষয়টি একই থানার উপপরিদর্শক তাহের দেখছেন বলে জানান তিনি।
উপপরিদর্শক (এসআই) তাহের বলেন, একই এলাকার মানুষ তারা। এক পক্ষ মাটি তুলে। অপরপক্ষ বাধা দেয়। আমরা মাটি তোলা বন্ধ করে দিয়েছি। বিষয়টির সুরাহা না হলে মাটি তোলা বন্ধই থাকবে।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।