এক সময়ের খরস্রোতা খাল, নালা থেকে এখন ময়লার বাগাড়
ঝালকাঠির রাজাপুর শহরে জমির দাম আকাশচুম্বী। ভূমিদস্যুরা সরকারি খাল দখল করছে। গনিমতের মালের যে যেমন পারছে দখল করছে।আড়ালে আবড়ালে নয়, হাঁকডাক দিয়ে।
রাজাপুরের খরস্রোতা খালটি ভূমিদস্যুদের কারণে সরু নালায় পরিণত হয়েছে। নালাও কৌশলে দখলে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। তাদের ভয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করতে পারছেন না। নাকের ডগায় অবৈদ দখল হচ্ছে, কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন নীরব। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে।
খালটি দখলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈরতিক দলের নেতা, উঠতি পয়সাওয়ালারা জড়িত। যেকারণে প্রশাসনও নীরব। এতে আরও উৎসাহী হচ্ছে ভূমিদস্যুরা। প্রশাসনের নাকের ডগায় খাল দখল করে তাতে পাকা স্থাপনাও নির্মাণ করছে। বিভিন্ন স্থানে খালের মাঝ পর্যন্ত পাকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। দেখেও রাজাপুর উপজেলা প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের পুরোন বাজারের দক্ষিণ মাথার কামার পট্টি। সেখান থেকে দক্ষিণ দিক হয়ে জেল খানা, বাইপাস মোড়, দক্ষিণ রাজাপুরের তুলাতলার মধ্যদিয়ে পূর্ব দিকে জাঙ্গালিয়া নদীর সঙ্গে ভারানি খাল মিশে গেছে। বাঁকে বাঁকে এ খালটি প্রায় দীর্ঘ চার কিলোমিটার। খালের বিভিন্ন স্থানে ময়লার ভাগার, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক বাড়ি নির্মান করা হয়েছে। ফলে স্রোত বন্ধ হওয়ায় বিভিন্ন অংশ নালায় পরিণত হয়েছে।
বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির পানি জমা হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা নদীর রূপে পরিণত হয়।
রাজাপুর উপজেলা প্রশাসনও স্বীকার করেছে খাল দখলের বিষয়ে তাদের কাছেও অনেক অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা অহিদ সাইফুল, সাজিত হোসাইন সাজ্জাত, এনামুল খান, শাহজাহান মোল্লাসহ একাধীক স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা জানান, মধ্য বাজার এলাকা থেকে বয়ে যাওয়া ভারানি খালটি জেলখানার পেছনের এলাকা হয়ে টিঅ্যান্ডটি সড়কের মধ্য দিয়ে বাইপাস এলাকার ব্রিজ হয়ে তুলাতলার দিকে বয়ে গেছে। দখলে খালটির মৃতপ্রায়। নৌকায় করে বাজার আসা, স’মিল ও ধান মিলে ধান নেয়া, বাজারের মালামাল বহনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন। জোয়ারের সময় সামান্য পানি থাকলেও ভাটায় খালে পানিই থাকে না। এ কারণে শহরের কোথাও অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও পানির সঙ্কট দেখা দেয়। পানির উৎস পাওয়া যায় না। এ ছাড়া খালটির নালা ভরাট হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
বাইপাস এলাকার আ’লীগ অফিস-সংলগ্ন এলাকার খালটি ভরাট করে বাড়ি নির্মানের কাজ করার বিষয়টি চোখে পড়ার মতো হলেও প্রশাসন নীরব বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজাপুর উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা অভিজিৎ মজুমদার আপন দেশকে বলেন, সরকারি খালের জমির মালিকানা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি খালটি উদ্ধার করে দিলে খালটি খননের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়সমিন বলেন, চলতি জানুয়ারী মাসে বিএডিসি’র প্রকল্প পাওয়ার কথা রয়েছে। ওই প্রকল্প বরাদ্দ পেলে খালটি উদ্ধার করে একই সঙ্গে খননের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।