ছবি: সংগৃহীত
সপ্তাহ জুড়েই মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘাত। সোমবার সারাদিন ও মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। তবে এদিন রাত থেকে আবারও শুরু হয়েছে। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে একটি মর্টারশেল ও রাতে কিছু গুলি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়েছে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম কুলাল পাড়া এলাকার ঘটনা এটি। মঙ্গলবার রাতেও অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়েছে। কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও জান্তা সেনাদের মধ্যে সংঘাত চলছে। ইতোমধ্যে রাজ্যটির অনেকাংশ দখলের দাবি করেছে আরকান আর্মি। সীমান্তের ওপারে চলা গোলাগুলি ও মর্টারশেলের বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে বাংলাদেশে। তাদের সংঘর্ষ সারাদিন চললেও এপারে গোলাগুলির শব্দ বেশি আসছে রাতের বেলা। বিশেষ করে আরকান রাজ্যের পশ্চিম, পূর্ব এলাকায় এ সংঘর্ষ চলছে।
স্থানীয়রা বলছেন, মিয়ানমারে গোলাগুলির ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি সংঘাতে মিয়ানমারের গুলি ও মর্টার শেল দেশের ভেতরে এসে পড়ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন তারা। বিভিন্ন সময় নিক্ষিপ্ত গোলা সীমানা পেরিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তবর্তী লোকালয়ে এসে পড়ছে।
তুমব্রু সীমান্তের স্থায়ী বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মিয়ানমারে প্রতিনিয়ত গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাই আমরা। এটি নতুন কিছুই নয়। তবে ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কুলালপাড়া এলাকায় গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়ায় লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।
২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভূট্টো বলেন, মানুষের মাঝে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কিন্তু সীমান্ত থেকে স্থানীয়দের সরানোর কোন নির্দেশনা পাইনি। এছাড়া বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন>> বান্দরবানে সীমান্তবর্তী সাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে উত্তেজনা চলছে। এ অবস্থায় ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে যেন অনুপ্রবেশ না ঘটতে পারে, কিংবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না হয়, সেজন্য জেলা পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে। আমরা ঘুমধুম এলাকায় সাধারণ মানুষ-জনপ্রতিনিধি এবং বিজিবির সঙ্গে কথা বলেছি। সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, মিয়ানমারের ভেতরে কি হচ্ছে, তা আমরা বলতে পারছি না। তবে দেশের নিরাপত্তাসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সচেষ্ট রয়েছে প্রশাসন। সীমান্তে বিজিবির টহলও জোরদার করা হয়েছে। তাই আতঙ্কিত না হয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।