ফাইল ছবি
কয়েকদিন শান্ত থাকার পর আজ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মিয়ানমারের সীমান্ত।
দেশটির রাখাইন রাজ্যের আরকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর মধ্যেই চলমান সংঘাতে এপারের কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের সীমান্তে একটানা দু’সপ্তাহ সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বালুখালী এলাকার ওপারে মিয়ানমারের ভেতর আজ সকাল থেকে মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজ ভেসে আসে। নিয়মিত বিরতিতে শোনা যায় বিকট বিস্ফোরণের শব্দ। এতে নতুন করে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে ওই এলাকায় যে গোলাগুলি হচ্ছে, তা আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা মাদক চোরাকারবারি (মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত) নবী হোসেনের গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে চলছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
গত কিছুদিনের শান্ত পরিস্থিতির কারণে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরছেন স্থানীয়রা। অনেকে খেত-খামারে ফিরছেন।
থাইংখালির কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের থাইংখালি রহমতের বিল সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির ঘটনায় কৃষি-খেতের জমি ও বাড়ি-ঘর ছেড়ে পরিবারসহ আত্মীয়দের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম। একটানা দু’সপ্তাহ ধরে গোলাগুলি ও মর্টার শেলের ফায়ারের শব্দে খেতে ও জমিতে কাজ করতে যাওয়া তো দূরের কথা বাড়ি পর্যন্ত ছাড়তে হলো। তবে এ কয়েকদিন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত দেখা দিলে খেতে কাজ করতে আসলাম। গোলাগুলির এ ঘটনা নিয়ে সব সময় আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে ফায়ারের শব্দ বা গুলি এপারে এসে পড়তে পারে।
আরও পড়ুন <> গাজায় হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির কথা স্বীকার বাইডেনের
থাইংখালির আরেক কৃষক সৈয়দ হোসাইন বলেন, গত দু’সপ্তাহে ধানের জমিতে যেতে পারেনি। এখন যে কাজ করতে আসলাম তাও ভয়ের মধ্যে। কারণ যে কোনো সময় এপারে পড়তে পারে গুলি। এর কয়েকদিন আগেও এ সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বিজিপির অনেক সদস্য এ সীমান্ত দিয়ে পার হয়ে এপারে এসে স্কুলে আশ্রয়ে নিয়েছিলেন।চাষাবাদ করে সংসার চালাতে হয়। তবে এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত দেখা দেওয়ায় ধানে সার দিতে আসলাম।
উখিয়ার পালংখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তেজনা বিরাজ করে আসছিল। তার মধ্যে গত দু’দিন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত দেখা গেছে। এ কারণে সীমান্ত থেকে সরে যাওয়া লোকজন বাড়িতে ফিরছেন এবং যাদের খেতে ও চাষাবাদের জমি রয়েছে তারা কাজ করতে যাচ্ছেন বলে তিনি জানায়।
সকালে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলির বিষয়ে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সিরাজুল মোস্তফা বলেন, সকাল ৭টা থেকে মিয়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষা এলাকা থেকে গুলির শব্দ ভেসে আসছে। নিয়মিত বিরতিতে শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দ। সকাল ১০টা পর্যন্ত গোলাগুলি শব্দ শোনা গেছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন ও টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ওপারে মিয়ানমার অংশে আরাকান আর্মি ও সে দেশের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তুমুল লড়াই চলছে।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।