Apan Desh | আপন দেশ

গোলাগুলির শব্দে কাঁপছে টেকনাফ

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:১১, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ২১:১৪, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

গোলাগুলির শব্দে কাঁপছে টেকনাফ

ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমার সীমান্তের ঘাঁটিগুলো এখন আরকান আর্মির দখলে। সেখানে আপাতত গোলাগুলি বন্ধ। তবে এবার টেকনাফের সীমান্তের ওপারে চলছে তুমুল লড়াই। মর্টারশেল ও গোলাগুলির শব্দে ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠছে এ পাড়ের ঘরবাড়ি। নিরাপত্তার কারণে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে মানুষ চলাচল বন্ধ রেখেছে বিজিবি।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালেও ভারী গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। আতঙ্কে দিন কাটছে স্থানীয়দের।

টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, নিরাপত্তার কারণে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে মানুষের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আজকেও সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেটি মিয়ানমারের অনেক ভেতরে। তবে নতুন করে যাতে কেউ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রয়েছি।

তিনি বলেন, গতকাল রোববার পর্যন্ত বেশ কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে ১৬৫ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছি। পাশাপাশি সীমান্তে বসবাসকারী লোকজনকে জরুরি কাজ ছাড়া ঘোরাঘুরি করতে নিষেধ করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, রোববার ভোর থেকে সোমবার কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের হ্নীলা, হোয়াইক্যং ও শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া গেছে।

শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের টোল আদায়কারী ছিদ্দিক আহমদ বলেন, নাফ নদীর বুকে জেটি ঘাটে ভ্রমণে প্রতিনিয়ত মানুষের আনাগোনা ছিল। কিন্তু সীমান্তের গোলাগুলি বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তার কারণে এ জেটিতে দুইদিন ধরে লোকজনের যাতায়াত বন্ধ রেখেছে। এছাড়া কিছুদিন আগে টেকনাফ-সেন্টমাটিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা যারা সীমান্তের বাসিন্দা রয়েছি, ওপারের গোলাগুলিতে ব্যাপক প্রভাব পরেছে।

হ্নীলার বাসিন্দা মো. সাইফুল বলেন, আমার এলাকায় রাতে অনেক ভারি গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। সকাল থেকে গোলার শব্দ কমেছে। কিন্তু থেমে থেমে গোলার শব্দ পাচ্ছে সীমান্তের লোকজন। যার ফলে মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি কমেনি।

আরও পড়ুন>> রোহিঙ্গারা নাফ নদীতে, অনুপ্রবেশের শঙ্কা  

টেকনাফের জাদিমুড়া ক্যাম্পের বাসিন্দা হাসমত উল্লাহ বলেন, মংডু শহরের এতিল্লাপাড়ায় বসবাসরত চাচাতো ভাই আব্দুল্লাহর সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, তাদের অবস্থা খুবই খারাপ। মিয়ানমার জান্তা সরকার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলেছে।

জানা যায়, মিয়ানমারের রাখাইনে জান্তা বাহিনী ও সশস্ত্র আরাকান আর্মির মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এতে রাখাইনের মংডু শহরের বাঘগোনা, হাদিবিল, নলবনিয়া নয়াপাড়া গ্রামে হেলিকপ্টার দিয়ে হামলা চালানো হয়। ফলে কয়েক দিনে এসব এলাকার প্রায় চার হাজার লোক ঘর ছেড়েছে। তারা সীমান্তবর্তী সিকদারপাড়া ও মন্নিপাড়া গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষা করছে।

এর আগে, মিয়ানমারের ৩৩০ নাগরিক বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। তাদের মধ্যে দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সংখ্যা ছিল বেশি। এছাড়া দেশটির সেনাবাহিনী, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকও ছিলেন। তাদেরকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়