ছবি: সংগৃহীত
আত্মীয়স্বজন আছেন। প্রতিবেশীরাও আছেন। এরপরও নীরবতা। তাই দূর থেকেই শোনা যাচ্ছিল ঘরের ভেতরের বিলাপের সুর। এ চিত্র সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুনকে সমাধিস্থ করার পর তার বাড়ির চিত্র এটি। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ায়। এ গ্রামে সোমবার রাতে তাকে দাফন করা হয়।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান বৃষ্টি। এর ১১ দিন পর স্বজনদের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির ভেতর থেকে কান্নার শব্দ ভেসে আসছে। তখন বৃষ্টির ফুফু রোজিনা খাতুন বললেন, অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেও বৃষ্টির মাকে থামানো যাচ্ছে না। সান্ত্বনা দেয়ার ভাষাও আসলে নেই।
ঘরের ভেতর গিয়ে দেখা যায়, ‘বারবার মেয়ের নাম ধরে চিৎকার করছেন মা বিউটি বেগম। বিলাপ করছিলেন নিজের সন্তান, নিজের কাছে নিয়ে আসছি, শান্তি তো লাগবেই। আমার যে বুকভরা আশা, তা যে ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গেছে।’
একদিকে মেয়েকে হারানোর কষ্ট, অন্যদিকে মরদেহ ফেরত পাওয়া নিয়ে জটিলতা—সব মিলে কাহিল বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ। আদরের বড় মেয়েকে বড় ভাইয়ের কবরের পাশে নিজ হাতে সমাহিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করে মেয়ের মরদেহ আটকে রেখেছিল, তাদের কাছে কোনো প্রমাণ ছিল না। একটা সাদা কাগজে এটুকু দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে ১১ দিন হয়রানি করা হয়েছে। ১১ দিন কেন, ১১ বছর লাগলেও আমার মেয়ের মরদেহ আমি ফিরিয়ে আনতাম। আমার মেয়ের মরদেহ নিতে যারা বিঘ্ন সৃষ্টি করেছিল, আল্লাহ এর বিচার করবেন। আপনারা আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।’
বৃষ্টি খাতুন ঢাকায় সাংবাদিকতা করতেন। তিনি সেখানে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত ছিলেন। তবে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে বৃষ্টি খাতুন নাম রয়েছে। বেইলি রোডের ঘটনার পরদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে এসে বৃষ্টির মরদেহ শনাক্ত করেছিলেন তার বাবা। তবে রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা দাবি করেন, মৃতের নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। এরপর সৃষ্টি হয় জটিলতা।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।