ছবি: সংগৃহীত
করোনা পরবর্তী বিশ্ব মন্দায় হাবুডুবু খাচ্ছে। এরপর শুরু হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যা বিশ্ব অর্থনীতিকে আরও প্রভাবিত করেছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ সরকার মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে এসব নির্দেশনার তোয়াক্কা করেন না রহমতউল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠান খোলা কিংবা বন্ধ- দিনরাত জ্বলে একাধিক বৈদ্যুতিক বাতি।
নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের এ বিদ্যালয়ে কখনোই নেভানো হয়না বাতিগুলো। তারপরও নির্বিকার প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিদিনই অপচয় হচ্ছে বিদ্যুৎ। যার বিল পরিশোধ করা হচ্ছে সরকারি অর্থে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। দেখা যায়, শহরের পুরাতন বাবুপাড়া এলাকায় ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের সামনে লাগানো বাতি, পাশের পুরাতন ভবনের বারান্দার বাতি দিনরাত জ্বলছে। মূলত বাতিগুলো রাতে নিরাপত্তার জন্য লাগানো হয়েছে। কিন্তু দিনে বাতি জ্বালানোর ফায়দা বুঝে আসছে না অভিভাবকদের।
আরও পড়ুন>> চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
সকাল দুপুর রাত, বাতিগুলো প্রজ্বলিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। অথচ প্রধান গেটসহ ভবনের কেঁচি গেট ও কক্ষগুলো তালাবদ্ধ। দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকেই বিদ্যালয় চত্বরে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা বলেন, দিনের পর দিন এভাবে বিদ্যুৎ অপচয় করা হচ্ছে। কিন্তু কারও কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। বার বার বলা হলেও কেউ গুরুত্ব দেয়নি। স্কুল ছুটি থাকলে কেউ আসে না। ফলে দিন রাত জ্বলে বাতিগুলো।
সর্বশেষ বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় গিয়েও একই দৃশ্য চোখে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক মাধব চন্দ্রের মোবাইলে কল দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে প্রধান শিক্ষক হাফিজা খাতুনকে মোবাইল করা হলে তিনি সবসময় বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে থাকার বিষয় স্বীকার করেন। বলেন, অফিস সহায়ক মাধব চন্দ্রকে অনেকবার বললেও গায়ে লাগায়নি।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আমি নিজেও অনেক দিন দেখেছি দিনের বেলায়ও বাতি জ্বলছে। মোবাইল করে সতর্ক করলেও কেউ কথা শোনে না। নৈশ প্রহরী না থাকায় এমন হয়েছে। অফিস সহায়ক হিসেবে যে রয়েছে সে এ দায়িত্ব পালনে অনিচ্ছুক। কারণ তারা হাইকোর্টের একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের ডিউটি ৮ ঘণ্টার বেশি করবে না বলে জানান।
তিনি বলেন, দুই একটা বাতি এভাবে জ্বললে তেমন বিল হয় না। তাই বিদ্যুৎ বিলে কোন অসামঞ্জস্যও পাইনি। তারপরও যেহেতু আপনারা অভিযোগ করছেন প্রধান শিক্ষককে জানাচ্ছি যেন বাতি নেভানোর ব্যবস্থা করা হয়। দায়িত্বে অবহেলা করে বিদ্যুতের অপচয় করা হচ্ছে- এ বিষয়ে আপনার কি করণীয় কিছু নেই? এমন প্রশ্নে তিনি নীরবতা পালন করেন। সদুত্তর না দিয়ে প্রসঙ্গ পাল্টে বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে মোবাইলে সতর্ক করেন।
এরপর দুপুর ২টার দিকে অফিস সহায়ক মাধব চন্দ্রের মোবাইলে আবার কল দিলে এবার রিসিভ করে তিনি। বলেন, আজ আমি একটু দেরি করে এসেছি তাই বাতি জ্বালানো পেয়েছেন। খবর পেয়ে এইমাত্র বাতি বন্ধ করেছি। এ সময় মাধবকে এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করার বিষয় জানালে দায় স্বীকার করেন। বলেন, এখন থেকে আর এমন অবহেলা হবে না।
আপন দেশ/আরএস/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।