ছবি: আপন দেশ
নীলফামারী ডিমলায় ভিজিএফ কার্ড প্রতি ১ থেকে ২ কেজি চাল কম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ অনিয়মের প্রতিবাদকারীদের কোনো চালই দেয়া হয়নি।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিনে দেখা যায়, পরিষদের হলরুম থেকে চাল বিতরণ করছে ইউপি সদস্যরা। হলরুম থেকে বাহরে যাবার পরই দুইজন কার্ডধারীর চাল মিটারে ওজন দিলে ২০ কেজি চালের বিপরীতে ১৮ কেজি ১২০ গ্রাম চাল পাওয়া যায়। চারজনের আরেকটি বস্তা পরিমাপ করলে ৩৭ কেজি ৩৫০গ্রাম চাল পাওয়া যায়।
এ দৃশ্য দেখে চেয়ারম্যানের সহযোগী মিজানুর রহমান এসে মিটার ওয়ালাকে গালিগালাজ করতে থাকে। তিনি বলেন, কেজি প্রতি এক কেজি কম দিয়েছি তাতে সমস্যা কি? এটা তো থাকবেই। উপজেলা প্রশাসন জানেন, ট্যাগ অফিসার জানেন, আসেন বসে আলোচনা করি! কথা আছে, কথা না বলেই সমস্যা করছেন।
৬ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা ওমর আলী জানান, আমি ২টা স্লিপের চাল তুলেছি। দুই স্লিপে ২০ কেজি হওয়ার কথা কিন্তু ১৮ কেজি চাল পেয়েছি। সে বিষয়ে বলতে গেলে চেয়ারম্যানের সহযোগী নজরুল ইসলাম আমাকে ধমক দেয় আমি কিছু বলতে পারিনি।
বেলাল নামের আরেকজন জানান, এখন তো ১ কেজি কম দিচ্ছে সকালের দিকে কার্ড প্রতি দেড় থেকে ২ কেজি করে কম দিয়ে ছিল। পরে ইউএনও আসার পরে থেকে ১ কেজি করে কম দিতেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, সকাল বেলা ইউপি সদস্যদের স্লিপ বিক্রির হিড়িক চলছিল। পরে সবাইকে চাল কম করে দিতেছে। ওখানে একজন সরকারী কর্মকর্তা আছে ওনি তো ওনার মতো আছেন, দেখে না দেখার ভান করছেন।
চাল কম দেয়া কারণ জানতে চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাত করতে চাইলে তাকে খুজে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলে ফোন বন্ধ দেখায়।
অন্যদিকে ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় চাল ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ সারি। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও উপহারভোগীদের কাছে থেকে স্লিপ কিনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। তারপরেও প্রতি স্লিপের বিপরীতে সাড়ে ৭ থেকে ৯ কেজি চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরী তাতে উপস্থিত। সাংবাদিকদের দেখে তিনি ২ হাজার টাকা বের করেন। বলেন, টাকা টা নেন। সবাই আসতেছে আর নিয়ে যাচ্ছে আপনিও নেন।
কম দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি তো চাল ভাগ করে দিয়েছি। যে চাল কম দিয়েছে ওনি ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ছালমাকে অবগত করলে তিনি বলেন, চাল কম দেয়ার বিষয়ে ফোন দিয়ে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে, আমি কয়েক স্থানে পরিদর্শনে গিয়েছি। কোথাও কোনো অভেযোগ বা অনিয়ম পাওয়া যায়নি।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।