ছবি: সংগৃহীত
ধান নয়। বাঁশ ফুলের বীজ থেকে উৎপাদন হচ্ছে চাল। আর সেই চাল থেকেই রান্না হচ্ছে ভাত, পায়েস। খেতেও নাকি বেশ সুস্বাদু। ঘটনাটি দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার পাকাপান গ্রামের। বাঁশ ফুলের দানা সংগ্রহ করে তাক লাগিয়েছেন সাঞ্জু রায় (২৩)। এ দানা নিজের পরিবারের খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রিও করছেন। সাঞ্জু ওই গ্রামের কৃষক ছিমল রায়ের ছেলে।
সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির পাশের ঝাড় থেকে বাঁশের বীজ সংগ্রহ করছেন তিনি। সেই বীজ পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করে রোদে শুকাচ্ছেন। এরপর সেগুলো হাসকিং মিলে ভাঙাবেন। বাড়ির উঠানে প্রস্তুতকৃত এমন কয়েকটি বীজের বস্তা রেখেছেন। কিছু দানা ভাঙিয়ে রেখেছেন, গ্রামের অনেকেই তা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাঁশের ফুল থেকে চালের মতো উৎপাদন করার বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এটি দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।
সাঞ্জু রায়ের প্রতিবেশীরা জানান, বাঁশের বীজ থেকে দানা সংগ্রহ করার বিষয়টি তারা প্রথমে ছেলেমানুষি ভেবেছিলেন। পরে তার এ দানা সংগ্রহ দেখে তাজ্জব বনে যান! এখন উৎপাদিত এ দানা অনেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এটি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
সাঞ্জু রায় বলেন, আমি দিনমজুরি করে খাই। আজ থেকে এক মাস আগে পাশের গ্রামে কাজ করতে যাই। সেখানে কাজের ফাঁকে কালী চন্দ্র রায় (৭০) নামে একজন বাঁশের বীজ থেকে দানা সংগ্রহ করে খাওয়ার বিষয়টি জানান। তার কথা মতো আমি সেগুলো সংগ্রহ করে প্রথমে নিজে খাই। ভালো লাগায় এরপর থেকে তা সংগ্রহ করে যাচ্ছি। চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এ চাল ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে সাঞ্জু জানান, এটি বেশ কষ্টসাধ্য কাজ। প্রতিদিন ২০ কেজি বীজ সংগ্রহ করা যায়। এসব পরিষ্কার করে ভাঙিয়ে দানা বের করলে ধানের সমপরিমাণ চাল হয়।
এ বিষয়ে দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নুরুজ্জামান বলেন, ধান ও বাঁশ একই পরিবারে এরা উদ্ভিদ। তারা একই ধরনের দানা উৎপাদিত করতে পারে। এ চাল খাওয়ার উপযোগী। এর পুষ্টিগুন সাধারণ চালের তুলুনায় কম না। তবে বাঁশের বীজ থেকে চাল উৎপাদন আসলেই একটি বিরল ঘটনা।
আপন দেশ/টিআর/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।