Apan Desh | আপন দেশ

তীব্র গরমেও আড়াই হাজার গাছ কাটছে বন বিভাগ

রংপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:৪৭, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

তীব্র গরমেও আড়াই হাজার গাছ কাটছে বন বিভাগ

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ। রেহাই পাচ্ছে না প্রাণিকূলের হাজারো জীব। অনাবৃষ্টিতে হাহাকার মাঠের ফসল। এমন পরিস্থিতিতে যেখানে গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। সেখানে পরিবেশ বিপরীতমূখী কাজে মত্ত রংপুর বন বিভাগ। গত দুই মাস ধরে তারাগঞ্জ উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প ক্যানেলে লাগানো গাছগুলো কাটার যেন উৎসবে মেতেছে তারা।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশবাদীরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তারাগঞ্জ উপজেলার তিস্তা সেচ ক্যানেলের উন্নয়নকাজের জন্য ক্যানেলের দু’ধারে লাগানো গাছগুলো কেটে ফাঁকা করা হয়েছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আয়তন অনুযায়ী ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকার কথা থাকলেও উপজেলায় রয়েছে ৩ শতাংশের কম। তিস্তা সেচ ক্যানেল কেন্দ্রিক বনায়নের একটি বড় অংশ থাকলেও গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। ফলে ১ শতাংশের নিচে পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরপরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উন্নয়নমূলক কাজের জন্য গাছগুলো কেটে ফেলার দরপত্র দিয়েছে। ইতোমধ্যে গত দু’মাসে চার তৃতীয়াংশ গাছ কাটা হয়েছে।

স্থানীয়দের মতে, ক্যানেলের দুধারে গাছ থাকায় শিক্ষার্থীরা ছাঁয়া পথে স্কুল-কলেজে যায়। খড়া রোদে আরামে পথ চলে সাধারণ ও স্থানীয় পথচারি। বিকেলে ঘুরতে আসতো পাশাপাশি এলাকা থেকে অনেকেই।

এ বিষয়ে পরিবেশবাদী ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, এত গাছ একসঙ্গে কাটা ঠিক হয়নি। ক্যানেল সংস্কারের নামে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার প্রজেক্টের তেমন দরকার ছিল না। এতে অর্থের যেমন অপচয় তেমনি গাছগুলো কাটায় পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হবে।

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের সীমান্ত কেল্লাবাড়ি থেকে তারাগঞ্জের পাঁচ কিলোমিটার অংশের প্রায় আড়াই হাজার গাছ বিক্রি করা হয়েছে বলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জবা এন্টারপ্রাইজ সূত্রে জানা গেছে।

২২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫০ টাকায় দরপত্রের মাধ্যমে জবা এন্টারপ্রাইজসহ বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এসব গাছ দেয়া হয়। গাছ বিক্রির ৮০ শতাংশ টাকা উপকারভোগী ও ২০ শতাংশ টাকা বন বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ পাবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জবা এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে সাব-কন্ট্রাকে কিনে মালিকানা প্রতিষ্ঠান মাসুদ স’মিলস। প্রতিষ্ঠানটির মালিক মাসুদ রানা মোবাইল ফোনে বলেন, বন বিভাগ থেকে দরপত্র মূলে গাছগুলো কেনা হয়েছে। প্রয়োজনেই গাছগুলো কাটছি। তবে গাছ না থাকলে যাতায়াতে খুব কষ্ট হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা বলেন, গাছগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বন বিভাগের। তবে তাপপ্রবাহের সময় গাছগুলো কাটা ঠিক হয়নি। বাকি গাছগুলো যাতে তাপপ্রবাহ পর্যন্ত কাটা না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বলবো।

উপজেলা বন কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান রোকন বলেন, পাউবোর লোকেরা ভেকু দিয়ে মাটি ফেলার সময় গাছগুলো ভেঙে দিচ্ছিল। তাই বিভাগীয় অফিস থেকে দরপত্র আহ্বান করে গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। পাউবোর সেচ ক্যানেলের উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হলে ফের গাছ লাগানো হবে।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়