ফাইল ছবি
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার নতুন ফর্মূলা আবিষ্কার করেছেন এমপির ভাতিজা। ভরা জনসভাতে সে ফর্মূলার কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘নরমাল ভোটে জয়ী না হলে সিজার করা হবে। মাথার ওপরে এমপির হাত আছে।’ এ প্রার্থীর নাম ফেরদৌস পারভেজ। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ নেতা। তিনি জেলা পরিষদ সদস্যও।
তার বক্তব্যটি বিদ্যুত গতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ওঠে সমালোচনার ঝড়। প্রচ্ছন্ন এমন হুমকি সংবলিত বক্তব্যের নিন্দা জানাচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ বিরূপ মন্তব্য করছেন।
এমপির ভাতিজার এমন বক্তব্য এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে। এতে ভোটাররা ওই যুবলীগ নেতার হাত থেকে বাঁচতে তাকেই (ফেরদৌস) ভোট দিতে পারে-এমন কথাও বাতাসে ভাসছে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শুভ কুমার সরকার জানান, বক্তৃতার বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে অবগতও করা হয়েছে। তার নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে ওই ঘটনায় কেউ তার কাছে অভিযোগ করেনি।
প্রথম ধাপে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ৮ মে। এবারের ভোটে চেয়ারম্যান পদের জন্য ডিমলায় লড়ছেন চারজন। তাদের মধ্যে প্রভাবশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে দু’জনকে। তাদের একজন স্থানীয় সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকারের চাচাতো ভাই। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক সরকার। অন্যজন এমপির ভাতিজা। তিনি উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফেরদৌস পারভেজ। দু’জনই এমপির প্রার্থী বলে ভোটারদের কাছে প্রচার করছেন।
ভোটারের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ভোটযুদ্ধের কদিন আগেই এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থিরা। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২ মে) এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেন এমপির ভাতিজা ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘ভোটে জয়ী হতে হলে নরমালে যদি না হয়, সিজার করে করা হবে। মাথার ওপরে এমপির হাত আছে।’
বক্তব্যটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাাযোগ মাধ্যেমে সয়লাভ করে। স্থানীয়দের মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে, ‘ভোট হবে সিজারে, নাম হবে সিজারিয়ান চেয়াারম্যান।
এ বিষয়ে ফেরদৌসের কাছে জানতে চাইলে তিনি হুমকি দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, কেউ হয়তো এডিট করে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাগমাধ্যমে ছড়িয়েছে।
এদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী সভায় উপস্থিত ছিলেন- এমন কয়েকজন জানান, বক্তব্যটি ফেরদৌসেরই। তারা নির্বাচনী সভায় সরাসরি কথাগুলো শুনেছেন। এতে তারা বিস্মিতও হয়েছেন। একই সঙ্গে শঙ্কায় আছেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট নিয়ে।
হেনস্তার শিকার হওয়ার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েক ভোটার বলেন, এ রকম বক্তব্যের মাধ্যমে ফেরদৌস সাধারণ ভোটারদের হুমকি দিচ্ছেন। এসব বক্তৃতা শুনে ভোটারদের মনে ভীতির সঞ্চার হচ্ছে।
অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রহমান বলেন, সরকার যেখানে সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেখানে এমপির ভাতিজার এমন বক্তব্য এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে। এতে ভোটাররা ওই যুবলীগ নেতার হাত থেকে বাঁচতে তাকেই (ফেরদৌস) ভোট দিতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে নীলফামারী-১ (ডোমার ও ডিমলা) আসনের এমপি আফতাব উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।
