ছবি : আপন দেশ
পাবনার সুজানগরে নির্বাচনের পর সহিংসতায় ছড়িয়ে পড়েছে। বাড়িঘর, মন্দির, দোকানপাটে হামলা ভাঙচুর ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৮ মে) রাতে কয়েক দফায় কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এসব ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনে বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাবের সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে হামলা ও মারপিট করেছে। এতে মুক্তিযোদ্ধাসহ আহত হয়েছে অন্তত দশজন।
ভুক্তভোগীরা জানান, বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল ওহাব বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন। ভোটে শাহিন পরাজিত হয়। ফলাফল ঘোষণার পর ওহাবের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কয়েক ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশত বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর চালায়। এসময় গুরুত্বর আহত হয় আহমদপুর দক্ষিণচর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন খান, আলম, রানী বেগমসহ বেশ কয়েকজন। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।
সাগরকান্দি ইউনিয়নে বীরেন্দ্রনাথ কুন্ডুর পারিবারিক মন্দিরেও ভাঙচুর করেছে হামলাকারীরা।
সাতবাড়ীয়া ভাটপাড়া এলাকার সাব্বির বলেন, আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীনের নির্বাচন শেষে রাতে বাড়ি এসে ভাত খাচ্ছিলাম। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের সর্মথক ওহাবের লোকজন অস্ত্রসস্ত্রসহ দলবল নিয়ে আমাদের ঘর-বাড়িতে হামলা চালায়। ভাংচুর করাসহ ঘরে থাকা নগদ টাকা পয়সা স্বর্ণলঙ্কার লুটপাট করে নিয়ে যায়। এখন জীবন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি।
মানিকহাট ইউনিয়নের ক্ষেতুপাড়া এলাকার আরিফা খাতুন বলেন, শাহীন হেরে যাওয়ায় রাতের আধারে মোটার লোকজন বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে। ঘরে থাকা পেয়াজ বিক্রির নগদ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায় তারা।
এ হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে শাহীনুজ্জামান। তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের নানা ঘটনা থাকলেও সার্বিকভাবে জনগণের রায়কে আমি মেনে নিয়েছি। নির্বাচন নিয়ে আমি কোন অভিযোগ করিনি। আমার প্রত্যাশা ছিল নতুন উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমরা এলাকার উন্নয়নে কাজ করব। কিন্তু গতরাত থেকেই তারা যা শুরু করেছে তা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নৃশংসতাকেও হার মানায়। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই ও দোষীদের শাস্তির দাবি করছি। একই সঙ্গে জনগণের জান মালের নিরপত্তা দিতে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
হামলার বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি বিজয়ী চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব। নেতাকর্মীদের শান্ত থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
সুজানগর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, সুজানগরে নির্বাচন পরবর্তী বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃখলা বাহিনী সহিংসতা প্রতিরোধে তৎপর রয়েছে। এলাকায় নিরপত্তা বাড়ানো হয়েছে। হামলা মারপিটের ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।