ছবি: সংগৃহীত
‘বাবর নিরাপদে দেশে ফিরে এসেছেন। এতে আমরা সবাই খুশি। বাবর আমাদের পুরো চট্টলা তথা বাংলাদেশের গর্ব। তাকে নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি।’ এভারেস্টজয়ী বাবর আলী বাড়িতে ফেরার পর তাকে নিয়ে উল্লাস করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন তার এক শুভাকাঙ্ক্ষী।
মঙ্গলবার (২৮ মে) রাতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে হাটহাজারীর বাড়িতে ফেরেন বাবর। এ সময় তার বাড়িতে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। ফুল নিয়ে বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ শত শত শুভাকাঙ্ক্ষী।
বাবরের বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন মা, বাবা, বোনসহ পরিবারের সবাই। বাবর ফিরতেই সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
এ সময় বাবরের পরিবারে মনোবল যোগাতেই যেন চিৎকার করে কয়েক শুভাকাঙ্ক্ষী বলতে থাকেন- ‘চিটাইংগ্যে পোয়া, শুধু মেডিত পরিলে লোয়া ন, বরফত পরিলেও লোয়া (চট্টগ্রামের ছেলে শুধু মাটিতে নয়, বরফে পড়লেও লোহা)।’
এদিন বিকেলে নেপাল থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে পৌঁছান বাবর। সেখানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এরপর বিমানযোগে তিনি রওনা দেন চট্টগ্রামের উদ্দেশে।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের ১২ নম্বর গেট দিয়ে বীরদর্পে বেরিয়ে আসতেই বাবরকে ফুলের তোড়া, হলুদ গাঁদার মালায় ঢেকে দেন আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা একঝাঁক শুভাকাঙ্ক্ষী। নাম ধরে স্লোগানের পাশাপাশি একপর্যায়ে তাকে কাঁধে তুলে শূন্যে ছুড়ে উল্লাসও করেন তারা।
গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে নেপালের উদ্দেশে রওনা দেন বাবর। প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষে ৪ এপ্রিল কাঠমান্ডু থেকে উড়ে যান লুকলা বিমানবন্দরে। এরপর পথচলা শুরু করেন এভারেস্ট বেসক্যাম্পের উদ্দেশে। সেখানে পৌঁছান ১০ এপ্রিল।
এভারেস্ট অভিযানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়া। এজন্য একাধিকবার উচ্চতায় ওঠানামা করেছেন বাবর। ২৬ এপ্রিল বেসক্যাম্প থেকে এভারেস্টের ক্যাম্প–২ পর্যন্ত ঘুরে এসে উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার পর্ব সমাপ্ত করেন তিনি। এরপর অনুকূল আবহাওয়ার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয় তাকে।
১৪ মে মাঝরাতে বেসক্যাম্প থেকে চূড়া অভিমুখে যাত্রা শুরু করে ১৫ মে সকালে পৌঁছে যান ক্যাম্প ২-এ। সেখানে দুই রাত কাটিয়ে উঠে যান ক্যাম্প ৩-এ। সেখান থেকে ১৮ মে পৌঁছান ক্যাম্প ৪-এ। ২৬ হাজার ফুট উচ্চতার এ ক্যাম্পের ওপরের অংশকে বলা হয় ‘ডেথ জোন’। ১৮ মে মাঝরাতে আবারো শুরু হয় যাত্রা।
১৯ মে ভোরে ২৯ হাজার ৩১ ফুট উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষে বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা উড়ান ৩৩ বছর বয়সী বাবর। এর দুইদিন পর ২১ মে নেপাল সময় সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ৬টা ৫ মিনিট) লোৎসে পর্বতের শীর্ষে (৮ হাজার ৫১৬ মিটার) ওঠেন তিনি। নেপালের স্নোয়ি হরাইজন নামের ট্রেকিং ও পর্বতাভিযান পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে নতুন একটি অধ্যায় রচনা করেন বাবর।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।