Apan Desh | আপন দেশ

ইলিশের আকাল চাঁদপুরে, জেলেরা বিপাকে

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:১৪, ২৩ জুন ২০২৪

ইলিশের আকাল চাঁদপুরে, জেলেরা বিপাকে

ছবি : সংগৃহীত

মৌসুম শুরু হলেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার মোহনাতে নদীতে মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ। দিন-রাত নদীতে চষে বেড়িয়েও জ্বালানি খরচ উঠছে না জেলেদের। স্থানীয় রূপালী ইলিশের আমদানি না থাকায় নদী উপকূলীয় অধিকাংশ আড়তের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধে হয়ে যাচ্ছে। তবে ভর মৌসুমে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন ইলিশ ব্যবসায়ী ও মৎস্য বিভাগ।

ঈদুল আজহা পরবর্তী সময়ে জেলা সদরের মেঘনা উপকূলীয় জেলে পল্লী ও আড়তগুলোতে ঘুরে এবং জেলেদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

জেলা মৎস্য বিভাগের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, চাঁদপুরে ৪৪ হাজার জেলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করে জীবন জীবীকা নির্বাহ করে। পদ্মা-মেঘনা নদীর চাঁদপুর নৌ সীমানার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত বিস্তৃত এ মৎস অঞ্চল। বছরে দুটি সময় অর্থাৎ জাটকা এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ সময়ে তাদেরকে প্রণোদনা দেয়া হয়। এছাড়া এসব জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরীর লক্ষ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার হরিণা ও আখনেরহাট মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে অধিকাংশ ইলিশের আড়ৎ বন্ধ। ইলিশের আমদানি না থাকায় অনেক আড়তে ব্যবসায়ীরা অবসর সময় কাটাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ আড়তেই ঘুমিয়ে আছেন।

হরিণা মাছঘাটের ব্যবসায়ীরা বলেন, নদীতে এখন মাছ কম। যে কারণে ব্যবসায়ীরা অনেকেই অবসর সময় কাটাচ্ছেন। তবে নদীতে পানি বাড়লে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। বাকী আল্লাহর ইচ্ছা।

আখনের হাটের আড়তদারদের একজন বলেন, ইলিশের আমদানি না থাকায় ১১ আড়তের ৬টি বন্ধ। সঠিকভাবে জাটকা সংরক্ষণ না হওয়া ইলিশ নদীতে কমেছে। আবারও জেলেরা নদীতে নামলে জালের প্রকারভেদ নিয়ে নৌ পুলিশের হয়রানি তো আছেই।

সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দিয়া গ্রামের জেলেদের একজন জাকির হোসেন। তিনি বলেন, তার নৌকায় তিনিসহ ৫জন জেলে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেঘনায় ইলিশ ধরতে জাল ফেলেন। দুপুরে ফিরেছেন হরিণাঘাট আড়তে। ছোট বড় ৬টি ইলিশ বিক্রি করে পেয়েছেন ১ হাজার টাকা। এতে তাদের জ্বালানি খরচও উঠে না।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি বলেন, নদীতে নাব্যতা সংকটসহ নানা কারণে নদীতে ইলিশের বিচরণ কম। এসব সমস্যা সমাধানে এগিয়ে না আসলে ইলিশের প্রাপ্যতা কমতে থাকবে। গত কয়েক বছর স্থানীয় ইলিশের উৎপদান ক্রমান্বয়ে কমে আসছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, সদরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে আমরা বছর জুড়ে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছি। বিশেষ করে জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় আমরা জেলেদের সচেতন করে আসছি। এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সফল হয়েছে। আগামী মৌসুমে এটির সুফল পাবে জেলেরা। মিঠা পানিতে ইলিশের বিচরণ কম হওয়ার কারণ হিসেবে নদীতে চর জেগে উঠা, নদীর পানি দূষণ ও ইলিশের খাদ্য হ্রাস পাওয়াকে দায়ী করেন তিনি। তবে ভর মৌসুমে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও আশাবাদী এ মৎস কর্মকর্তা।

আপন দেশ/এইউ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়