ছবি: সংগৃহীত
বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কাবু শেরপুর সীমান্ত এলাকায় মানুষ। তার ওপর নেমে এসছে বন্যহাতির তাণ্ডব। কৃষকের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘরের ক্ষতির পাশাপাশি গোলায় থাকা ধান-চাল খেয়ে সাবাড় করে ফেলছে।
কৃষক রঞ্জিত ঘোষ বলেন, আমার সারা বছরের খাওনের ধান-চাল আছিল ঘরে। আত্তি (হাতি) তো ঘর ভাইঙ্গা আমার আসবাবপত্রসহ সব শেষ কইরা দিল। অহন সারা বছর পরিবার লইয়া কী খামু?
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার (৩ জুলাই) রাতে নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা নাকুগাঁও স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ৩০-৩৫টি বন্যহাতির একটি দল কৃষকের ছয়টি বসতঘর ভেঙে দিয়ে ধান-চাল খেয়ে ফেলেছে। এ সময় বন্যহাতি তাড়াতে গিয়ে গ্রাম পুলিশের সদস্য নিরঞ্জন রবিদাসসহ কয়েকজন কৃষক আহত হয়েছেন। নিরঞ্জনকে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বনবিভাগ ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, খাদ্যের সন্ধানে প্রায়ই এ এলাকার লোকালয়ে নেমে আসে বন্যহাতির দল। বুধবার রাত ৯টার দিকে বন্যহাতির দল কৃষক রঞ্জিত ঘোষ, সিন্ধু ঢালু, নিরঞ্জন রবিদাস ও সুমন রবিদাসের ছয়টি বসতঘর ভেঙে ফেলে।
ঘরে থাকা আসবাবপত্র ও ফ্রিজ গুঁড়িয়ে দেয় এবং ধান-চাল খেয়ে ও ছিটিয়ে নষ্ট করে। এ ছাড়া কৃষক রূপেন ঢালুর ২০ শতাংশ জমির রোপা আমন বীজতলা নষ্ট করেছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, বন্যহাতির দলটি বসতঘর ভেঙে কৃষক রঞ্জিত ঘোষের ২০ মণ ধান ও পাঁচ মণ চাল, সিন্ধু ঢালুর ২০ মণ ধান ও চাল, নিরঞ্জন রবিদাসের ১৫ মণ ধান এবং সুমন রবিদাসের ১৫ মণ ধান-চাল খেয়ে ও মাটিতে ছড়িয়ে নষ্ট করে।
বাড়ির উঠানে থাকা কাঁঠাল, কলাগাছ ও আমগাছ উপড়ে ফেলে। কৃষক রঞ্জিত ঘোষের গোয়ালঘর ভেঙে একটি গরুকে আক্রমণ করে বন্যহাতির দল।
নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, বন্যহাতির দল তাণ্ডব চালিয়ে বসতঘর, আসবাব ও ধান-চাল খেয়ে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। পাহাড়ে বন্যহাতির খাদ্যের ব্যবস্থা করা গেলে সীমান্তের মানুষ একটু শান্তিতে থাকতে পারত।
বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, হাতির আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে গেছে। হাতির খাদ্যের অভাব রয়েছে। হাতির খাদ্য ও আবাসস্থলের জন্য বনবিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।