সমাবেশে বক্তব্য দেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
এনপিকে উদ্দেশ্য করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, গত ১৬ বছর যে রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করেছে তাদের প্রতি প্রত্যাশা অনেক। কিন্তু আপনাদের কি এমন হলো— ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার দোসরও আপনাদের সাথে কাজ করার আগ্রহ জানায়। তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বকে বলে আমরা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকালে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নূর হোসেন হল মাঠে ‘জুলাই বিপ্লবকে সমুন্নত রাখতে এবং রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিপ্লবী ছাত্র জনতার করণীয়’ শীর্ষক ছাত্র সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
পিতার আগে সন্তান হাঁটলে রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যায়— বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুগ্ধ, আবু সাঈদ, ওয়াসিম যখন বুক পেতে দিয়েছিল তখন রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যায়নি। বরং পিতার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আমরা সমন্বয়ক। এটা মোটামুটি গালি হয়ে গেছে। আমাদের কিছু অপরাধ রয়েছে। ৫ আগস্টের পূর্বে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি। এটা আমাদের প্রথম অপরাধ। আমাদের সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা হয়েছে, আয়নাঘরে রেখে জোর করে আমাদের নেগোশিয়েট করতে বাধ্য করেছিল তখনও আমরা কোন সমঝোতাই যাইনি—এটা আমাদের দ্বিতীয় অপরাধ। আমাদের তৃতীয় অপরাধ ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম- গণরুম নামে যে ধরনের টর্চার সেলগুলো ছিল তা নাই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও অপরাধ তারা টেন্ডারবাজিতে জড়িত না, তারা চাঁদাবাজিতে জড়িত না। তারা বিদ্যমান যে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত রয়েছে সেগুলোর প্রতিনিয়ত সমালোচনা করে— এটি হচ্ছে আমাদের সর্বোচ্চ অপরাধ।
আইএসআই, আল-কায়দার মতো হাছান মাহমুদ ভিডিও বার্তা দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে তারা বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে চায়। কোন কারণে আবার যদি ফ্যাসিস্টরা রাষ্ট্র কাঠামোয় অনুপ্রবেশ করে সর্বপ্রথম যাকে টার্গেট করবে তারা হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত ১৬ বছর যে রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করেছে তাদের প্রতি প্রত্যাশা অনেক। কিন্তু আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই বিনয়ের সঙ্গে আপনাদের কি এমন অবস্থান হলো যার কারণে শেখ হাসিনার দোসরও আপনাদের সাথে কাজ করার আগ্রহ জানায়?
আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দলীয় রাজনীতি চর্চার জায়গা হতে পারে না। দলীয় লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতির বদলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। আমরা আমাদের প্রতিনিধি তৈরি করব, নেতা তৈরি করব না। গত ১৬ বছরে যখনই কেউ নেতা হয়েছে তার পা মাটি স্পর্শ করেনি। আমরা ওই ধরনের নেতা চাই না।
হাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থী সানজিদা পারভীন রিপার সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম ও আবু সাঈদ লিওন। এ সময় হাবিপ্রবি’র মো. সুজন রানা, তোফাজ্জল হোসেন তপুসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।