Apan Desh | আপন দেশ

ছেলের নির্যাতনে বাড়িছাড়া বৃদ্ধা মা

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:৫১, ১২ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১২:২৫, ১২ নভেম্বর ২০২৪

ছেলের নির্যাতনে বাড়িছাড়া বৃদ্ধা মা

ছবি : আপন দেশ

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ছেলের নির্যাতন ও মামলায় বাড়িছাড়া হয়েছেন বৃদ্ধা মা আয়েশা আক্তার। ৭৯ বছর বয়সী এ নারী গত পাঁচ দিন ধরে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের আত্মীয় বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

আয়েশা আক্তার উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের চরজুবলী গ্রামের মৃত হাজী সিদ্দিক উল্যার স্ত্রী।  

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার দুই ছেলে, পাঁচ মেয়ে। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে বড় ছেলে ফয়েজ উল্যাহ আমাকে প্রতিনিয়ত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেই চলছে। বড় ছেলেকে তার বাবা সুবর্ণচরে মোটরসাইকেল শোরুম ও ডিলার ব্যবসা ধরিয়ে দেয়। সে ব্যবসায় দেড় কোটি টাকা লোকসান করে। পরবর্তীতে ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে আমার অনুরোধে তার বাবা গ্যারান্টার হয়ে সুবর্ণচর ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে ২৫লক্ষ টাকা সিসি লোন নিয়ে দেন।

এক বছর পর সিসি লোন না দিয়ে ব্যাংকের অফিসারের যোগসাজশে স্বাক্ষর জাল করে লোন বর্ধিত করে। বিষয়টি জানতে পেরে তার বাবা দুর্নীতি কমিশনসহ বিভিন্নস্থানে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিখিত অভিযোগ দেন।  

এ নিয়ে একাধিক পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে ফয়েজ উল্যার ইন্ধনে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোন নোটিশ ছাড়াই দোকান ভিটি নিলামের নোটিশ টাঙ্গিয়ে দেয়।

আয়েশা আক্তার অভিযোগ করে আরও বলেন, একপর্যায়ে সকল ওয়ারিশসহ জমি বিক্রি করে সুদসহ ব্যাংকের ৩৮ লাখ টাকা পরিশোধ করে। তবুও দোকান ভিটি থেকে যায় ফয়েজের দখলে। এভাবে ৩৮ লাখ টাকা যায় তার পকেটে। দোকান ভাড়ার ২৬ হাজার টাকাও দীর্ঘ দিন থেকে সে ভোগ করছে। সবার অজান্তে দুই বোনকে নিয়ে ওয়ারিশী সম্পত্তি ৪০ লাখ টাকা বিক্রি করে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে আবার সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক ঝগড়ার সূত্রপাত হয়।

ছেলের দোকান থাকা অবস্থায় আমার মাসে ৮-১০ হাজার টাকার ওষুধ লাগতো। তা চাইলে সে তার স্ত্রী পপির কথা শুনে আমাকে প্রহার করে। স্বামীর সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি ছেলের নামে লিখে দেয়ার জন্য আমার ওপর শারীরিক অত্যাচার করে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটায়। বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে মানববন্ধন করিয়ে মিথ্যাচার করে।  

এ বৃদ্ধা মা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, পূর্বের ঘটনায় যদি আমার ছেলের বিচার হতো, তাহলে সে আজ আমাকে বাড়ি ছাড়া করার সাহস পেতো না। সরকার ও প্রশাসনের কাছে তার যথাযথ বিচার চাই।

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া জানান, বৃদ্ধা মা তার দুই ছেলে সহ এক বাড়িতে বসবান করেন। ঘর তোলাকে কেন্দ্র করে ওই বৃদ্ধা নারীর বড় ছেলে মারধরের শিকার হয়। এ ঘটনায় মাসহ চারজনকে আসামিকে করে মা দায়ের করে ভুক্তভোগীর স্ত্রী। ওই মামলায় মা সহ দু্জনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। পরে বৃদ্ধা মা জামিনে আসেন।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়