আপন দেশ।
পাবনার বাজারে বর্তমানে আমদানির আলুর দাপট চলছে। সরকারি বন্ধের কারণে ক্রেতাদের বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে। প্রতি কেজি নতুন আলুর দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। একই সময়ে শীতকালীন সবজির দামও কিছুটা বাড়তি। পাবনা সমৃদ্ধ সবজি উৎপাদন হলেও অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে সরবরাহ কমে গেছে। ফলে দাম বেড়েছে।
বাজারে বর্তমানে মুলা, কপি, বেগুন, শিমসহ নানা শীতকালীন সবজি পাওয়া যাচ্ছে। তবে এসব সবজির দাম কিছুটা বেশি। বিক্রেতারা জানান, মাঠের অবস্থা খারাপ হওয়ায় সরবরাহ কম। সে কারণে দাম কিছুটা বেশি। বর্তমানে মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, ফুলকপি ৭০-৮০ টাকায়, বেগুন ৪০-৬০ টাকায়, শিম ৯০-১০০ টাকায়। অন্যান্য সবজি যেমন পটল ৬০, মিষ্টি কুমড়া ৪৫-৫০, পেঁপে ৪৫, শসা ৫০-৭০, কাঁচা মরিচ ৯০, লাউ ৩০-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। গত দুই সপ্তাহে ১০-২০ টাকা দাম কমেছে। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম ১১০ টাকা। আমদানি পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সবজি ও নিত্যপণ্যের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
বিক্রেতারা বলেন, পাবনায় আমদানির আলুর দাপট রয়েছে। দেশী আলু কম আসায় দাম বেশি। সরকারি বন্ধের দিনে আমদানি পণ্য বাজারে আসে না। ফলে শুক্র ও শনিবারে দাম বেড়ে যায়। তবে শীতকালীন সবজির দামও কিছুটা বেশি। কারণ অতিবৃষ্টির কারণে অনেক ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতার কারণে আবাদে দেরি হয়েছে।
বাজার করতে আসা নাইমা জান্নাত জানান, পাবনায় শীতকালীন সবজির সরবরাহ প্রচুর। কিন্তু দাম কমছে না। যেখানে হাত দেই, সেখানেই আগুন।
অন্য ক্রেতা আশিষ বলেন, আলুর দাম কমছে না। ব্যবসায়ীরা এখন আলুর দাম বাড়াচ্ছেন। একদিনের মধ্যে আলুর দাম ১৫ টাকা বেড়ে গেছে।
লাইব্রেরি বাজারে বাজার করতে এসেছেন হাসান রহমান। দোকানদারের সঙ্গে তার দরকষাকষি দেখে এগিয়ে গেলে তিনি জানান, গত পরশু আলু নিলাম ৮৫ টাকায়। আর আজ বলছে ১০০ টাকা। একদিনের মধ্যে ১৫ টাকা দাম বেড়ে গেলো। বেসরকারি চাকুরি করি। হিসেবের সংসার৷ কিন্তু বাজার বাবদ মাসিক খরচই হিসেব করতে পারছি না।
আরেক ক্রেতা রশিদ জানান, দিন শেষে আমাদের ভাগ্য বদলায় না। নতুন সরকার আসলো, সবাই ধারণা করেছিলাম অন্তত বাজারটা নিয়ন্ত্রিত থাকবে। কিন্তু সেটা দেখছি না। যে বাজার সেটাই রয়ে গেছে। সেই১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি নাই। শুধু মুলা, মিষ্টিকুমড়া ও লাউয়ের মত দু'একটা সবজি ১০০ টাকার নিচে।
বড়বাজারের বিক্রেতা মহিদুল ইসলাম জানান, পাবনার পুরো বাজারে আমদানি আলুর দাপট। দেশী আলু দুএক বস্তা আসে, এ দিয়ে বাজার চলে না। সরকারি বন্ধের দিনে পাবনায় আমদানি পণ্য ঢোকে না, এর ফলে শুক্র ও শনিবার আমদানির আলুর দাম বেশি হয়। এ নিয়ে অবশ্য ক্রেতাদের সাথে অতিরিক্ত কথা খরচ করতে হয়।
শীতকালীন সবজির ব্যাপারে এ বিক্রেতা বলেন, অন্যান্য জেলার তুলনায় পাবনায় সাধারণত সবজির দাম কম হওয়ার কথা। কিন্তু এবার একটু বেশিতেই বেচা বিক্রি হচ্ছে। কয়েক দফায় বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও জমিতে জলাবদ্ধতা থাকায় আবাদে দেরি হয়েছে, কোথাও আবাদই করা যায়নি। এর ফলে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি। এজন্য দাম কিছুটা বেশি। তবে কৃষকের দিক বিবেচনায় দাম ঠিক আছে।
আরেক বিক্রেতা শরীফ বলেন, এ সপ্তাহ ধরে বাজার একই। কোনোটার দাম ৫/১০ টাকা কমছে, আবার কোনোটার বাড়ছে। যেমন গত দুদিনের তুলনায় ফুলকপির দাম ১৫/২০ টাকা কমেছে, অন্যটায় বেড়েছে। সবমিলিয়ে বাজার একই। আমাদের যেমন কেনা তেমন বেচা।
আপন দেশ/ এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।