Apan Desh | আপন দেশ

বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৪৩, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভ।

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা নদীর চরাঞ্চলে শুকনো মৌসুমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। কিছু অসাধু বালু ব্যবসায়ী রাতের আঁধারে কৃষকদের ফসলি জমির বালু কেটে তা ট্রাকযোগে বিক্রি করছেন। এতে স্থানীয় কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ভূঞাপুর উপজেলার বলরামপুর, তারাই ও গারাবাড়ি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা গারাবাড়ী এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তারা মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন। এতে করে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে যান। বালু উত্তোলন বন্ধের আশ্বাস দেন। এরপর বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন। এতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাহিমা বিনতে আখতার ঘটনাস্থলে এসে একই আশ্বাস দেন।

এর আগে সকালে স্থানীয়রা তারাই স্কুল মাঠে সমবেত হয়ে গারাবাড়ী এলাকায় অবৈধ বালুঘাটে গিয়ে বালু উত্তোলনের বেশ কয়েকটি ভেকু (মাটিকাটার যন্ত্র), একটি ড্রাম ট্রাক ও পাইপ ভাঙচুর করে বিক্ষোভ করেন। পরে তারা পাইপগুলো মহাসড়কে নিয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জানান, স্থানীয় বিএনপির নেতা আনোয়ার হোসেন ওরফে সুইট, মোজাম্মেল হোসেন ও যুবদল নেতা টিপুর নেতৃত্বে এ বালুঘাটটি পরিচালিত হচ্ছে। তারা একাধিকবার বাধা দিলেও তাদের কথা শোনা হয়নি। রাতের আঁধারে ফসলি জমি কেটে বালু বিক্রি করা হচ্ছে।

এছাড়া ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের তারাই, কুঠিবয়ড়া, অর্জুনা, জগৎপুরা ও নলিন এলাকার বেশ কিছু পয়েন্টে যমুনা নদীতে বাঁধ দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাইড ভেঙে গাড়ি চলাচলের রাস্তা তৈরি করে চর কেটে বালু বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব বালু ঘাট নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।

বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলেন, যমুনা নদী শুকিয়ে যাওয়ার পর বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বে বালু কাটা শুরু হয়েছে। দিন-রাত ভেকু দিয়ে বালু কেটে ট্রাকযোগে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে তাদের ফসলি জমি কেটে নিচ্ছে। এইভাবে নদীর চর কাটলে পাড় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। যা বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

স্থানীয় সিফাত বলেন, যেভাবে বালু কাটা হচ্ছে, তাতে আগামী বন্যায় ঘরবাড়ি ভেঙে যাবে। আমাদের জমিও কেটে নিচ্ছে। তিনি প্রশাসনের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। অন্যথায় তারা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন সুইট বলেন, আমি কিছু বলতে পারব না। 

অপর বিএনপি নেতা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, স্থানীয়দের দাবির বিষয়টি উর্ধ্বতন নেতাদের জানানো হয়েছে। মানববন্ধন না করার জন্য তাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও সড়ক অবরোধ ও ভেকু ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম জানান, সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের আশ্বাস দেয়ার পর তারা অবরোধ তুলে নেন। বালু উত্তোলনে জড়িতদের বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিমা বিনতে আখতার জানান, যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়