ছবি: আপন দেশ
পাবনায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধের অভিযানে নামে পাবনা জেলা প্রশাসন। এ অভিযান আটকে দিয়েছে ভাটা মালিক ও শ্রমিকরা।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়া জেলার সাদিপুর ইউনিয়নের ভ্রমড়ার মোড় এলাকায় অভিযানিক দলের গাড়ি আটকে দেন তারা। পরে অভিযানিক দল পিছু হটতে বাধ্য হন।
অভিযানটি পরিচালনা করেন পাবনা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুরাদ হোসেন। এছাড়াও কুষ্টিয়ার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাতুল ইসলাম ও কুমারখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিরুল আরাফাতের নেতৃত্বে দুটি অভিযানিক দল উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানিক দলটির তথ্যমতে, পাবনায় ব্যাপকহারে অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটার অধিকাংশই পরিবেশ অধিদফতর বা জেলা প্রশাসনের অনুমোদনহীন। অনেক ক্ষেত্রে এখানে নিষিদ্ধ চিমনি ব্যবহার করা হয়। শর্তের বাইরে গাছ পোড়ানো হয়। এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার লক্ষ্যে পাবনা ও কুষ্টিয়ার যৌথ অভিযান পরিচালোনা করা হয়।
তবে সাদিপুর ইউনিয়নের ভ্রমড়ার মোড় এলাকায় এসে ভাটা মালিকরা হাজার হাজার শ্রমিক নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। তারা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ইটভাটা বন্ধ করার প্রতিবাদ জানান।
অবরোধকারীদের পক্ষ থেকে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম আজম বলেন, হাজার হাজার শ্রমিক এখানে কাজ করে নিজেদের সংসার চালায়। তারা ইতোমধ্যে মোটা অংকের দাদন (অগ্রিম টাকা) নিয়েছে। যদি ভাটা বন্ধ হয় তারা কীভাবে খাবে? কিভাবে দাদন পরিশোধ করবে?
তিনি আরো বলেন, এভাবে হঠাৎ ভাটা বন্ধ করা অন্যায়। যদি বন্ধ করতেই হয় তাহলে আগে মাইকে ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করতে হতো।
শ্রমিকদের পক্ষে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আ. মজিদ বলেন, এ বছর ইটভাটাগুলো বন্ধ করা হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শ্রমিকরা। ইতোমধ্যে কয়েকশত কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। শ্রমিকরা অগ্রিম টাকা নিয়েছে। এখন যদি ইটভাটা বন্ধ হয় তারা কীভাবে সংসার চালাবে? এ বছর ইটভাটাগুলো চলতে দেয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, আগামী বছর যদি বন্ধ করতে হয় তাহলে আগে জানিয়ে দেয়া হোক। যাতে শ্রমিকরা অন্য কাজ খুঁজে নিতে পারে।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী পাবনা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুরাদ হোসেন বলেন, আমরা কুষ্টিয়া ও পাবনার তিনটি টিম যৌথভাবে অভিযান চালাতে এসেছিলাম। কিন্তু যখন আমরা ভ্রমড়ার মোড় এলাকায় পৌঁছাই, ইটভাটা মালিকরা শ্রমিকদের দিয়ে আমাদের আটকে দেন। কয়েক হাজার নারী ও পুরুষ রাস্তায় বসে আমাদের সামনে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি।
পরিবেশ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পাবনা সদর উপজেলায় মোট ৫২টি ও পুরো জেলায় ১৭৩টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৩০টি বৈধ ইটভাটা, বাকি সবগুলো অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।