Apan Desh | আপন দেশ

কারখানা খোলার দাবিতে বেক্সিমকো শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পুলিশের লাঠিচার্জ

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

কারখানা খোলার দাবিতে বেক্সিমকো শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পুলিশের লাঠিচার্জ

ছবি : আপন দেশ

গাজীপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ ঘোষিত ১৬ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে তারা  মহানগরীর সারাবো-চক্রবর্তী এলাকায় সড়কে বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। পরে তাদের সরিয়ে দিতে লাঠি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। এ সময় শ্রমিক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর মধ্যে ঘটে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনাও। পরে পুলিশ লাঠি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। আন্দোলনরত শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে প্রায় সাত ঘণ্টা পর চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় ১০-১২ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকরা জানান, শনিবার সকাল ৯টার দিকে শ্রমিকরা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের জিরানী ও চক্রবর্তী এলাকায় কাঠের গুঁড়ি ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। এ ছাড়া আশপাশ থেকে ময়লা-আবর্জনা এনে সড়কে ফেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়ে ওই সড়কে চলাচলকারীরা। সড়কটির দুই পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট।

খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ, কাশিমপুর থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। দফায় দফায় শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কথা না শুনে আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে উঠে সড়কের বিভিন্ন স্থানে কাঠ ও ময়লা-আর্বজনা ফেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে বাধ্য হয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে চলে গেলে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের বন্ধ হওয়া কারখানাগুলোয় প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বেক্সিমকো শিল্প পার্কের ১৬টি কারখানা (তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্রয়াদেশ না থাকা এবং কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র খুলতে না পারায়) বন্ধ ঘোষণা করে বেক্সিমকো গ্রুপ কর্তৃপক্ষ।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, ৫ আগস্টের আগে পর্যন্ত তারা সময়মতো বেতন-ভাতা পেয়েছেন। এখন কারখানায় কাজ নেই, এমন মিথ্যা অজুহাতে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারখানা বন্ধ হওয়ায় হাজার হাজার শ্রমিক খুব কষ্টে দিন পার করছেন। সংসারের খরচ চালাতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন তারা। বাড়িওয়ালারা বাসা ছেড়ে দিতে চাপ দিচ্ছেন। দোকানিরা বাকিতে আর নিত্যপণ্য দিচ্ছেন না। সামনে জানুয়ারি মাস। ছেলেমেয়েদের কীভাবে স্কুলে ভর্তি করাবেন ভেবে পাচ্ছেন না তারা।  

নাওজোড় হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম বলেন, মহাসড়ক অবরোধ করায় ওই সড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওই সড়কে চালাচলকারীরা দুর্ভোগে পড়ে। 

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবু তালেব বলেন, ‘মিকরা কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করে। ফলে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

কাশিমপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ধাওয়া দিয়ে শ্রমিকদের সরিয়ে দেয়া হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়