Apan Desh | আপন দেশ

আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে পিঁড়িতে বসে চুল কাটা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:৫২, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে পিঁড়িতে বসে চুল কাটা

ছবি: আপন দেশ

মানুষ চুল কাটায় তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন ঘটাতে। আর এ কাজটি করেন নরসুন্দর বা নাপিত। যদিও তাদের অনেকেই নরসুন্দর হিসেবে পরিচিত নন। গ্রামবাংলায় ‘নাপিত'’ নামেই বেশি পরিচিত। মানুষ চুল ও দাড়ির মাধ্যমে নিজের সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে। আর এ কাজের জন্য তাদের কদরও ছিল অনেক বেশি।

একসময় হাট-বাজার কিংবা গ্রাম-গঞ্জে কাঠের পিঁড়িতে বসে নরসুন্দররা মানুষের চুল ও দাড়ি কাটতেন। তবে সময়ের পরিবর্তনে ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় এ ঐতিহ্য এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। যদিও এখনো কিছু গ্রামাঞ্চলে কিছু হাট-বাজারে পিঁড়িতে বসে চুল কাটা চলে। 

ঠাকুরগাঁও জেলার ভুল্লী হাট বাজারে এখনো চোখে পড়ে সে চিরচেনা দৃশ্য। এখানকার নরসুন্দররা এখনো মানুষের চুল ও দাড়ি কাটেন কাঠের পিঁড়িতে বসে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ। যারা অধিক ব্যয় বহন করতে চান না। তারা এখানেই চুল ও দাড়ি কাটাতে আসেন।

নরসুন্দর রতন কুমার বলেন, এখানে সপ্তাহে ২ দিন বসি। ভ্রাম্যমাণভাবে হাটে ২ দিন কাজ করি। ১৫-২০ বছর আগে চুল কাটার জন্য ৪-৫ টাকা নেয়া হতো। যা দিয়ে ভালোভাবেই সংসার চলতো। কিন্তু বর্তমানে চুল কাটতে ২৫-৩০ টাকা ও দাড়ি কাটতে ১৫-২০ টাকা নেয়া হয়। তবুও এত কম দামে চুল দাড়ি কাটাতে গ্রাহক পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সারাদিনে ৩০০-৩৫০ টাকা উপার্জন হয়। যা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। প্রায় ৪০-৪৫ বছর ধরে এ পেশায় আছি। তবে পেশা ছাড়তে পারছি না আবার ভালোভাবে কাজও পাচ্ছি না।

এ সকল না‌পি‌তের কা‌ছে চুল কাটাতে আসা গ্রাহকরা জানান, যদিও এখন অনেক আধুনিক সেলুন আছে। তবে সেখানে চুল কাটানো আমাদের সাধ্যের বাইরে। তাই আমরা সাশ্রয়ী এ নাপিতদের কাছে চুল কাটাতে আসি।

ভুল্লী বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ভুট্টু চৌধুরী বলেন, কালক্রমে পিঁড়িতে বসে চুল কাটার দৃশ্য খুব একটা দেখা যায় না। তবে এক সময় আমি নিজেও বাবার হাত ধরে পিঁড়িতে বসে চুল কাটাতে যেতাম। আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজকাল শহর ও গ্রামে অনেক আধুনিক সেলুন গড়ে উঠেছে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ এখন চুল কাটাতে অভ্যস্ত।

আজকাল প্রযুক্তি ও আধুনিক সেবার কারণে সেলুনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে এসব সেলুনে যাতায়াত করতে বেশি অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। তবে এর মধ্যে কিছু গ্রামীণ ঐতিহ্য এখনও বেঁচে রয়েছে। এটি সামাজিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়