Apan Desh | আপন দেশ

বড়দিন উদযাপনে পাবনার খ্রিষ্টান পল্লিতে উৎসবের আমেজ

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১০:৫০, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বড়দিন উদযাপনে পাবনার খ্রিষ্টান পল্লিতে উৎসবের আমেজ

বড়দিন ঘিরে চলছে গির্জা সাজসজ্জা আলোকসজ্জার কাজ। বাড়িতে বাড়িতে চলছে গোশালা তৈরি।

খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ ২৫ ডিসেম্বর। এবছর এ উৎসব উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে পাবনার খ্রিষ্টান পল্লীগুলোতে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বাড়ি-বাড়ি আলোকসজ্জা, গোশালা তৈরি, ক্রিস্টমাস ট্রি সাজানো, নগরকীর্তন—সব কিছু মিলিয়ে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষরা দিন-রাত ব্যস্ত উৎসবের প্রস্তুতিতে।

বড়দিনের এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মজীবী মানুষরা ছুটে এসেছেন পাবনায়। যীশু খ্রিষ্টের জন্মতিথি পৃথিবী থেকে হানাহানি ও বৈষম্য দূর করবে বলে প্রত্যাশা তাদের। এদিকে জেলায় বড়দিন উৎসব শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে উদযাপনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

খ্রীস্ট ধর্মাবলম্বীদের মতে কয়েক হাজার বছর আগে বেথেলহেমের এক গোশালায় মাতা মেরির গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন যিশু খ্রিষ্ট। সে থেকে প্রতিবছর ২৫ ডিসেম্বর সারাবিশ্বের খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা মহাসমারোহে পালন করেন যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন। সে যিশু খ্রিষ্টের জন্মতিথি ‘বড়দিন’ উদযাপনে পাবনা জেলার খ্রিষ্টান সম্প্রদায়দের মধ্য এখন বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ।

গির্জা বা উপাসনলয়গুলো সাজানো হয়েছে নানা রং বেরংয়ের সাজে। বড়দিন উপলক্ষ্যে যিশুর আগমনি বার্তা সবাইকে জানান দিতে বাড়িতে বাড়িতে চলছে নগরকীর্তন। বড়দিন ঘিরে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে বাড়ির গৃহিণীরা ব্যস্ত পিঠাপুলির আয়োজন নিয়ে।

পাবনা শহরের মিশন হাউসপাড়ার বাসিন্দা চামেলি রিতা ডি কস্তা বলেন, বড়দিন উপলক্ষ্যে আমাদের প্রত্যেকের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। সে-কারণে প্রত্যেক বাড়িতে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা করেছি। আমাদের প্রভু যিশু খ্রিষ্ট বেথেলহামের যে গোশালায় জন্মেছিলেন, তার আদলে প্রত্যেক বাড়িতে গোশালা স্থাপন ও সেটিকে সাজিয়ে পরিপূর্ণ করেছি। সবমিলিয়ে আমরা যে যে-রকম যতটুকু পারছি বড়দিনকে উদ্‌যাপনের আয়োজন সম্পন্ন করেছি।

একই এলাকার গৃহিণী রীনা বর্মন জানান, বড়দিনের আনন্দ ভাগ করে নিতে বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে এসেছেন। আমরা ঘর সাজিয়েছি, ক্রিস্টমাস ট্রি সাজিয়েছি, গোশালা তৈরি করেছি। অতিথিদের জন্য পিঠাপুলি, পায়েশসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করেছি। বড়দিনের কেনাকাটাও শেষ।

পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চের সাধারণ সম্পাদক উত্তম দাস জানান, বড়দিন উপলক্ষ্যে ছয়দিনব্যাপী বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এসব আয়োজনের মধ্যে রয়েছে শোভাযাত্রা, প্রাক বড়দিন উৎসব, নগর কীর্তন, বড়দিনের উপাসনা, কেক কাটা, পিঠা পর্ব, প্রীতিভোজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তিনি আশা করেন প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবারের বড়দিনের উৎসব উদ্‌যাপন হবে।

পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চের যাজক মি. ইসহাক সরকার বলেন, এ পৃথিবীতে যাতে দেশে দেশে, সমাজে সমাজে, মানুষে মানুষে কোনো বিভেদ, অশান্তি না থাকে, শান্তি বিরাজ করে সে বার্তা ও প্রত্যাশা নিয়ে এবারের বড়দিন উদ্‌যাপন করবো।

চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ধর্মপল্লীর যাজক বিনাশ তিগ্যা বলেন, আমাদের প্রত্যাশা আমরা এবার বড়দিনের মাধ্যমে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি লাভ করবো। প্রভু যিশু খ্রিষ্ট যে প্রত্যাশা নিয়ে আবার এ জগতে আসছেন আমরা সে প্রত্যাশা নিয়ে পরিপূর্ণ হবো।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, পাবনায় এবার ২২টি গীর্জায় বড়দিনের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। বড়দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে উদ্‌যাপন করতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সকল গীর্জায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকি পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। পাশাপাশি আগাম তথ্য পাওয়ার জন্য সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়