ছবি: আপন দেশ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আবাদী মাঠ থেকে আলু ফসল তোলা শুরু হয়েছে। মোহনপুর ইউনিয়ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত মণ আলু মাঠ থেকে উঠছে। সব মাঠেই আলুর ফলন ভালো হারে মিলছে। কৃষকেরা মাঠ থেকে আলু তুলে বিক্রি করছেন। এক মণ নতুন আলু সাড়ে সাতশো থেকে আটশো টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানানো হয়, এবারের মৌসুমে এক হাজার ৩৫ হেক্টর পরিমাণ জমিতে নানা জাতের আলু ফসলের আবাদ হয়েছে। এক হাজার ১৫ হেক্টরে আবাদের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিলো। প্রায় ২০ হেক্টর পরিমাণ জমিতে বেশী আবাদ হয়েছে। বিগত বছরগুলোর মতো এবারেও মোহনপুর ইউনিয়নের সাতবিলা, নাদা, মাহমুদপুর, দুর্গানগর ইউনিয়নের রাউতান, ভাটরেড়া, ভাদালিয়া কান্দি, মুলবেড়া মাঠে সবচেয়ে বেশী পরিমাণ জমিতে আলু ফসলের আবাদ হয়েছে। গত দিন পাচেক হলো মোহনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাঠ থেকে আলু ফসল তোলা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সাতবিলা, নাদা, মাহমুদপুর মাঠ এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকেরা জমি থেকে আলু ফসল তুলছেন। পুরুষ মজুরদের পাশাপাশি গ্রামীণ নারীরা আলু তুলছেন। নাদা গ্রামের কৃষক আ. আলিম নিজস্ব পাচ বিঘা জমিতে দেশী রোমানা জাতের আলু আবাদ করেছেন। গত পাচ দিন হলো আলু তুলছেন। প্রতি ডেসিমেল জমিতে প্রায় সোয়া দুই মণ হারে ফলন মিলছে বলে জানান।
মঙ্গলবার তোলা প্রায় আট মণ আলু সরিষাকোল বাজারে নিয়ে পাইকারী সাড়ে সাতশো টাকা মণ দরে বেচেছেন। তিনি বলেন, আলুর এখনকার দামে মনে খুশী ভাব নেই। একই মাঠে আবদুল্লাহ পোদ্দার প্রায় বারো বিঘা জমিতে আলু আবাদ করেছেন। বুধবার আলু তোলা শুরু করেছেন।
সাতবিলা মাঠে দুই বিঘা জমিতে আলু আবাদকারী কৃষক বাবু মিয়া বলেন, পোনে দুই মণ হারে ফলন হয়েছে। মোহনপুরে সাতশো বিশ টাকা দরে আলু পাইকারী বেচেছেন।
একই মাঠে আ. ছালাম বলেন, তিনি আলুর ফলনে বেশ খুশী। তবে এখনকার দাম কম বলে জানান।
মাহমুদপুর মাঠে কৃষক মতিন আলু তোলা মঙ্গলবার শুরু করেছেন। এলাকার মাঠগুলোয় দেখা গেছে বহু গ্রামীণ নারী আলু তুলছেন। গৃহস্থ কৃষকদের কাছ থেকে জানা গেছে পুরুষ মজুরদের দিনের মজুরী বাবদ পাচশো টাকা দেয়া হচ্ছে। আর একজন নারীকে একই কাজে দুইশো টাকা মজুরী দেয়া হচ্ছে।
একাধিক নারী বলেন, তারা ঘরে বসে না থেকে এলাকার মাঠে দলবেধে আলু তুলছেন। মজুরী বাবদ পাওয়া টাকা সংসারের বাড়তি আয় বলে জানান।
এদিকে উপজেলার বর্ধনগাছা আড়তে প্রতিদিন শত শত মণ আলু পাইকারী কেনাবেচা হচ্ছে। কৃষকেরা মাঠ থেকে আলু তুলে বাড়ীতে না নিয়ে বেচতে সরাসরি এখানে আনছেন।
সরেজমিনে বর্ধনগাছা আড়তে দেখা গেছে, এলাকার ব্যবসায়ীরা আলু কিনছেন। ব্যবসায়ী বরাত আলী বলেন এখন প্রতিদিন সাত থেকে আটশো মণ আলু এখানকার আড়তে আমদানী হচ্ছে। আমদানী পরিমাণ আর বাড়বে। প্রতিদিন এখান থেকে আলু সিলেট মোকামে সবচেয়ে বেশী পরিমাণ বেচতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এছাড়া ঢাকা, পাবনা, খুলনা এলাকায় ব্যবসায়ীরা এখান থেকে আলু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আজ সবচেয়ে বেশী সাড়ে সাতশো টাকা মণ দরে আলু কিনছেন।
উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আসয়াদ বিন খলিল রাহাত বলেন, আলুর ভালো ফলনে কৃষকেরা লাভবান হবেন। কৃষকেরা পরের বছর আবাদে নিজ উদ্যোগ বীজ আলু সংরক্ষণ করবেন। কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ থাকবে ভলো জাতের বেশী হারে ফলনশীল বীজ আলু সংরক্ষণ করার। কৃষকেরা নিজেদের বাড়ীতে পরে বেচতে আলু সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন। এর জন্য আলু তোলার পর বাছাই করে ভলো আলু রাখতে হবে।
আপন দেশ/এসএমএস
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।