Apan Desh | আপন দেশ

টাঙ্গাইল খাদ্য কর্মকর্তাকে শোকজ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫

টাঙ্গাইল খাদ্য কর্মকর্তাকে শোকজ

ছবি: আপন দেশ

টাঙ্গাইল জেলার বিশ্বাস বেতকা এলএসডির সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা জিয়াউল করিম মোহাম্মদ তারেকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন খাদ্য গুদামে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা। 

এদিকে কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকেও ১০৫টি ভি-ইনভয়েসে অগ্রীম স্বাক্ষর করে ফেঁসে গেছেন তিনি। এ কারণে গত বৃহস্পতিবার তাকে শোকজ করা হয়েছে। একই সাথে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতেও বলা হয়েছে তাকে। 

গত বৃহস্পতিবার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুরাইয়া খাতুন স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে এ শোকজের বিষয়টি জানানো হয়। 

জানা যায়, গত ৯ জানুয়ারি থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বাস বেতকা এলএসডির সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা জিয়াউল করিম মোহাম্মদ তারেক কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তিনি কর্মস্থল ত্যাগ করার সময় ১০৫টি ভি-ইনভয়েসে অগ্রীম স্বাক্ষর করে যান, যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শেষে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে শোকজ করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর ছেলে জিয়াউল করিম মোহাম্মদ তারেকের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করে। কিন্তু তৎকালীন খাদ্য মন্ত্রীর সাথে ঘনিষ্ঠতা থাকায় ২০১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে দুদক সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন জানিয়ে দেন যে জিয়াউল করিম তারেকের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। সে সময় তিনি চট্রগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর তাকে চট্রগ্রামে চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক পদে দায়িত্ব দেয়া হয়।

এরপর ফের তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও চাকুরিবিধি অমান্য করে বিদেশ ভ্রমণের অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর খাদ্য অধিদপ্তরের প্রাক্তন মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ বিভাগীয় মামলা করেন। তবে আওয়ামী পরিবারের সন্তান হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে সাহস পায়নি কেউ।

 দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ সরকারের দাপট দেখিয়ে নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। এর মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আয়কর রিটার্নে দেখা যায় মোট ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার সম্পত্তির তথ্য উল্লেখ করেছেন। এর পাশাপাশি রয়েছে বিএস খতিয়ান নম্বর ১০৩৮৪ ঝিলংজা কক্সবাজার মৌজায় ২ দাগের ১০ শতাংশ এবং বিএস খতিয়ান নম্বর ৩২০১ কাকারা চকরিয়া মৌজায় ৪০ শতাংশ জমি জিয়াউলের নিজ নামে। 

এছাড়া তার বড় ভাই লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম সেলিমকে চকরিয়ায় ১০ টাকা মূল্যের চাল বিতরণের জন্য ‘ভাই ভাই ট্রেডার্স’নামে একটি লাইসেন্স করে দেন। তবে পরবর্তীতে ১০ টাকা মূল্যের চাল কালোবাজারে বিক্রির দায়ে সে লাইসেন্স স্থগিত করা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে জিয়াউল করিম মোহাম্মদ তারেক জানান, তিনি চক্রান্তের শিকার। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা।

এবিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ তানভীর হোসেন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা জিয়াউল করিম মোহাম্মদ তারেককে শোকজের বিষয়টি তিনি জানেন। এছাড়াও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুরাইয়া খাতুন স্বাক্ষরিত একটি পত্র পেয়েছেন তিনি।

আপন দেশ/এসএমএস

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়