Apan Desh | আপন দেশ

পাহাড়ি বাংলাদেশিদের ভোটার হতে বাধা ইসির পরিপত্র

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

পাহাড়ি বাংলাদেশিদের ভোটার হতে বাধা ইসির পরিপত্র

ফাইল ছবি

রাষ্ট্রীয় পরিপত্র এবং স্থানীয়দের উপজাতিদের অসহযোগিতার কারণে ভোটার হতে পারছে না পাহাড়ী বাংলাদেশিরা। স্থানীয়রা বলছেন, নানামুখি প্রতিবন্ধকরা তাদের নাগরিকত্বকেও হুমকিরমুখে ঠেলে দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। তারা কমিশনের দৃষ্টি কামনা করেছেন। 

খাগড়াছড়ির সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূইয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে বিস্তারিত উল্লেখ করে চিঠি দাখিল করেছেন। উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে  পাহাড়ী বাঙালি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ থেবে বাদ দেয়া হচ্ছে। নতুন করে নিবন্ধিতও হতে পারছে না অনেকে। এতেকরে পরোক্ষভাবে সন্তু লারমার দীর্ঘদিনের দাবির বাস্তবায়ন ঘটছে খাগড়াছড়িতে-এমন অভিযোগ উঠেছে। 

গত ২০ জানুয়ারি থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের গত ২১ আগষ্ট জারিকরা পরিপত্র ( নং ১৭.০০.০০০০.০২৬.৩২.০১২.২৩.৩০৮) অনুসরণ করতে গিয়ে পাহাড়ের বাঙালি জনগোষ্ঠী ভোটার নিবন্ধন ও হালনাগাদ-এ অন্তর্ভূক্ত হতে পারছে না। কমিশনের পরিপত্রের নির্দেশনার আলোকে বিশেষ ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম সহজীকরনের লক্ষ্যে ভোটার নিবন্ধনকে ৩টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে, ‘বি’ ক্যাটাগরির ৩ ও ৪ নং ক্রমিক অনুযায়ী বাবা-মায়ের অস্থায়ী ও স্থায়ী বাসিন্দার সনদ চাওয়া হয়েছে।  

স্থানীয়রা জানায়, পার্বত্য জেলায় উপজাতীয় এবং বাঙালিদের (মুসলিম ও হিন্দু-বড়ুয়া) মধ্যের মানসিক দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ভোটার নিবন্ধন ও হালনাগাদ কার্যক্রম যারা করছেন, তাদের অধিকাংশই উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর। তারা চায় না বাঙ্গালি বাসিন্দারা ভোটার হোক। তাদের এ চাওয়ায় রসর যোগিয়েছে নির্বাচন কমিশনের পরিপত্র।

খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের জারিকৃত স্মারকে বর্ণিত শর্তের দোহাই দিয়ে বাবা-মায়ের অস্থায়ী এবং স্থায়ী বাসিন্দার সনদ চাওয়া হচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলের ভোটার নিবন্ধনকে সহজীকরণের বদলে জটিল করা হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে স্থায়ী বাসিন্দা সনদ শুধুমাত্র তারাই পায় যাদের রেজিষ্ট্রিকৃত ভূমি আছে। আর স্থায়ী বাসিন্দা সনদ পাওয়ার প্রক্রিয়াটি সময় সাপেক্ষ ব্যপার। পার্বত্য অঞ্চলের শতকরা ৭৫ভাগ লোক শিক্ষার হার বঞ্চিত। সেক্ষেত্রে পরিপত্রের উক্ত ৩ ও ৪ নং ক্রমিকের জন্য এখানে অসংখ্য ভোটার নিবন্ধন করা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে পার্বত্য জেলায় স্থায়ী বাসিন্দার সনদ জেলা প্রশাসক বা সার্কেল চিফ হতে নেয়ার পক্রিয়া খুবই দীর্ঘ। কাগজপত্র হাতে পেতে অন্ত:ত একমাস লেগে যায়। বাঙালি জনগোষ্ঠীকে উপজাতীয় সার্কেল চিফ জায়গা-সম্পত্তির মালিক না হলে স্থায়ী বাসিন্দার সনদ দিতে চান না। সে হিসেবে নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্রুত ভোটার নিবন্ধন বা হালনাগাদ কার্যক্রম করা যাচ্ছে না। 

অন্যদিকে গত প্রায় ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে হামলা-মামলার কারণে খাগড়াছড়ি জেলার অধিকাংশ ভোটার ঘরবাড়ী ছাড়া ছিল।

খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূইয়া নির্বাচন কমিশনের সুত্রোক্ত স্মারকে বর্ণিত শর্তের ‘বি’ ক্যাটাগরির ৩ ও ৪ নং ক্রমিক বাতিল করে পার্বত্য অঞ্চলের ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে সহজীকরণের জন্য দাবি জানান। 

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়