Apan Desh | আপন দেশ

শর্তে মিলছে সয়াবিন তেল, বিপাকে ক্রেতারা

সিলেট সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১১:১০, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৩:১৬, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শর্তে মিলছে সয়াবিন তেল, বিপাকে ক্রেতারা

ছবি : আপন দেশ

সিলেট নগরীর কালীঘাট এলাকার পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেলের সঙ্কটে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে সরেজমিনে কালীঘাট পাইকারি বাজারে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। তেল সংকটের কারনে শর্তের মাধ্যমে তেল ক্রয় করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। শুধু সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে না, তার সঙ্গে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।

কালীঘাট এলাকায় মুদি দোকানের জন্য মালামাল কিনতে এসে নগরীর জেরজেরি পাড়ার হবিব স্টোরের মালিক বলেন, অন্য অনেক পণ্য সঠিক দামে ও পরিমাণ কিনতে পারলেও সয়াবিন তেল কিনতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এক লিটারের এক কার্টুন সয়াবিন তেল কিনতে এক বস্তা চাল কিনতে হয়েছে আমাকে। এক বস্তা চাল না কিনলে, ডিলার তেল বিক্রি করবে না। তাই বাধ্য হয়ে এক বস্তা চাল কিনতে হয়েছে।

একই কথা জানালেন অনেক খুচরা বিক্রেতা। বেশ কয়েকজন খুচরা বিক্রেতা বলেন, সয়াবিন তেল কিনতে হলে ডিলাররা সঙ্গে চিনি গুড়া চাল, দুধ, ঘিসহ যে পণ্য গুলো বাজারে চলে না সেগুলো ধরিয়ে দিচ্ছে। আমরা পাড়া মহল্লার মুদি  দোকানদার। এক কার্টুন সয়াবিন তেল নিতে গিয়ে চিনি গুড়া চাল নিতে হচ্ছে। কিন্তু এক বস্তা চিনি গুড়া চালের ক্রেতা তো আমাদের দোকানে নেই। সয়াবিন তেল সবার নিত্যপণ্য তাই দোকানে রাখা লাগে। এই জন্য পাইকারদের কাছ থেকে বাধ্য হয়ে তাদের শর্তে সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে।

সারা দেশের মতো সিলেটের বাজারেও গত কয়েক দিন ধরে সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট চলছে। সে সংকট এখন আরও বেড়েছে। তাই খুচরা ব্যবসায়ীরা যখনই পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে যান তখন বিভিন্ন কোম্পানির অফ  প্রোডাক্ট (বাজারে কোম্পানির যে পণ্যগুলো চলে না) সেগুলো কিনতে বাধ্য করছেন। তাই খুচরা ব্যবসায়ীরা কম পরিমাণে সয়াবিন তেল কিনছেন। এ ছাড়াও বডি রেটের চেয়ে বেশি মূল্যে সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে।

সরজমিনে কালীঘাট পাইকারি বাজারে দেখা যায়, আগে যে ভাবে দোকানের সামনে সয়াবিন তেল সাজিয়ে রাখতেন ডিলাররা এখন সেভাবে তেল ডিসপ্লে করছেন না তারা। প্রচুর খুচরা ক্রেতা বাজারে এসেছেন। পেঁয়াজ, রসুন, মসলাপাতি বেশ পরিমাণে কিনলেও সয়াবিন তেল খুব অল্প কিনছেন খুচরা বিক্রেতারা। ক্রেতা যে কোম্পানির সয়াবিন তেল কিনছেন তাকে সে কোম্পানির বিভিন্ন পণ্য কিনতে বলছেন। পাইকারদের কথা মতো অন্য পণ্য না কিনলে সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন না।

নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকার স্বপ্না স্টোরের মালিক মিশন তালুকদার বলেন, পাইকারি বাজার থেকে তেল কিনতে হলে চাল, ঘি কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা খুচরা বিক্রেতারা ক্রেতাদেরকে এভাবে তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করতে পারি না। তাই দেখা যাচ্ছে, তেল বিক্রি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু অন্য যে পণ্য গুলো কিনেছি সেগুলো দোকানেই থেকে যাচ্ছে।

এ দিকে কালীঘাটের পাইকাররাও বলছেন একই কথা। বেশ কয়েকজন পাইকারী ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় সব কোম্পানি তেল সরবরাহ কমিয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি তেল কিনতে গেলে ওই কোম্পানি গুলোর বিভিন্ন অফ প্রোডাক্ট কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাই পাইকরারও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে একই নিয়মে তেল বিক্রি করছেন।

কালীঘাট পাইকারি বাজারে মেসার্স জননী ভাণ্ডরের মালিক অলক পাল বলেন, পুষ্টি কোম্পনির এক কার্টুন ৫ লিটার সয়াবিন  তেল কিনতে ১৩৫০ টাকা দামের ঘি কিনতে হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন অফ আইটেম কিনতে হচ্ছে। যেগুলো আমরা সচরারচর তাদের কাছ থেকে কিনি না। সেজন্য খুচরা বিক্রেতাদের কাছে আমরা তাদের প্রক্রিয়ায় তেল বিক্রি করছি। কারণ ওই অফ আইটেম গুলো না বিক্রি করতে পারলে আমার ক্ষতি হবে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়