Apan Desh | আপন দেশ

বরিশালে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৩৮, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ২০:৪০, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বরিশালে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

কলাগাছ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করছেন শিক্ষার্থীরা

বরিশাল জেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার। ফলে শিক্ষার্থীরা নিজ প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি। কিছু কিছু বিদ্যালয়ে কলা গাছ কেটে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলেও তার সংখ্য খুবই কম। এতে জেলা ও উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অথবা পার্শ্ববর্তী কোনো বিদ্যালয়ে শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ও ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হবে বলে আশঙ্কা সচেতন মহলের।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বরিশালের ১০ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ হাজার ৫৯২টি। এর মধ্যে আগৈলঝাড়ায় ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২টিতে, উজিরপুরে ১৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০টিতে, গৌরনদীতে ১৩১টির মধ্যে ১২টিতে, সদর উপজেলায় ২০৩টির মধ্যে ১৩টিতে, বাকেরগঞ্জে ২৮০টির মধ্যে ১৬টিতে, বানারীপাড়ায় ১২৬টির মধ্যে ৫টিতে, বাবুগঞ্জে ১৩৪টির মধ্যে ৩০টিতে, মুলাদীতে ১৪০টির মধ্যে ১৯টিতে এবং হিজলায় ৯২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৮টিতে শহীদ মিনার রয়েছে। আর মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় ২০৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটিতেও নেই শহীদ মিনার। 

জেলায় ১ হাজার ৫৯২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১৫৩ বিদ্যালয়ে রয়েছে শহীদ মিনার। তবে জেলা শহরের বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার না থাকার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে জায়গা সংকটের কথা।

এদিকে ভাষার জন্য শহীদ জাতির সূর্য সন্তানদের প্রতি নিজ প্রতিষ্ঠানে শ্রদ্ধা জানাতে না পেরে মনকষ্টে আছেন এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে তাদের অনেকেই কাছাকাছি স্কুলগুলোতে গিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আবার যেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, সেখানে তৈরি করা হয় অস্থায়ী শহীদ মিনার। ভাষা শহীদদের স্মরণে বিদ্যালয়গুলোতে দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুজনের সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাইলে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার প্রয়োজন। তবে দুঃখের বিষয় অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তা নেই। আমরা চাই শৈশব থেকে শিশুরা ৫২ এর ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানুক। তারা ভাষা ও দেশপ্রেমিক হোক। ফলে দ্রুত এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা যাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেই দাবি জানাচ্ছি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. গোলাম মোস্তফা সরোয়ার হোসেন বলেন, এখানে নতুন এসেছি। শহীদ মিনারের সংখ্যা না দেখে বলতে পারব না। তবে আমার জানামতে, শহীদ মিনারের জন্য সরকারি পর্যায়ে বাজেট আসে। স্থানীয় পর্যায়েও কেউ যদি শহীদ মিনার নির্মাণ করতে চায় তাহলে করতে পারে। কিন্তু সংকট হচ্ছে জমি নিয়ে। অনেক স্কুলেই পর্যাপ্ত জমি আছে। কিন্তু সেই জমি অবৈধ দখলে। সেখানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা যাচ্ছে না।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা উচিত। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয়ে এটি করতে হবে। শহীদ মিনার নির্মাণ করতে যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, তাহলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

আপন দেশ/এমএস

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়