
হাবিব উন নবী খান সোহেল
শেখ পরিবারকে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্নীতিবাজ পরিবার বলে মন্তব্য করেছেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হাবিব উন নবী খান সোহেল।
তিনি বলেন, বিগত ১৫-১৬ বছরে দেশের ব্যাংকগুলে শূন্য করে দেয়া হয়েছে। শেখের ছোট কন্যা রেহানাকে টাকা না দিয়ে কোনো ব্যবসায়ী ব্যবসা করতে পারিনি। পুতুল ও তার স্বামী গলা পর্যন্ত টাকা খেয়েছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাঙ্গামাটি শহীদ আব্দুর শুক্কুর স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এসব কথা বলেন করেন হাবিব উন নবী খান সোহেল।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিরোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, পতিত স্বৈরচারের দোসরদের বিচার ও গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ২০০৯ সালে ফ্যাসিস্ট সরকার বঙ্গবন্ধু পরিবার সুরক্ষা আইন করেছে। এ আইনের কারণে ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক এসএসএফ সদস্যরা তার পরিবারের সদস্যদের পাহারা দিবে।
আরেকটি আছে শেখ পরিবারের জয়। মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য মতে, পৃথিবীর দামি ৮টি গাড়ি আছে জয়ের কাছে। এ ৮টি গাড়ির টাকায় ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা সম্ভব বলে জানান তিনি।
হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামে স্যাটেলাইট তৈরি করা হয়েছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে, এ স্যাটেলাইট তৈরিতে খরচ হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা। কিন্তু খরচ দেখানো হয়েছে, তিন হাজার কোটি টাকা। সেখানেও লোপাট করা হয়েছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণে খরচ হয়েছে ৮ বিলিয়ন ডলার। সেখানে খরচ দেখানো হয়েছে, ১২ বিলিয়ন ডলার। লোপাট এখানেও করা হয়েছে। শেখের নাতনী টিউলিপ এ দুর্নীতি করেছে।
এ নেতা বলেন, চারদিক শুনি আপা আসবে। আমিও চাই আপা আসুক। ওনি আসলে হাতে হাতকড়া পরিয়ে সব গণহত্যার বিচার করা হবে।
আক্ষেপের সঙ্গে হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, যে নেত্রী বারবার জনগণের ভোটে বিজয়ী, সেই নেত্রীকে দুর্নীতির মামলায় বছরের পর বছর কারাগারে আটক রাখা হয়েছিলো। এত অনুরোধ করার পরও শুনা হয়নি আমাদের কথা। যেইদিন ধানমন্ডি ৩২ দাও দাও করে জ্বলছিলো- সেইদিন আমাদেরও খারাপ লেগেছিলো। কারণ আমরা সন্ত্রাস বা মব জাস্টিস বিশ্বাস করি না।
শেখ হাসিনার উদ্দশ্যে তিনি বলেন, আপনি আমাদের নেত্রীকে এক কাপড়ে ঘর থেকে বের দিয়েছিলেন। সেই দিনের কথা আমরা ভুলেনি।
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে। কারন আপনি ইতিহাস রচনা করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের উদ্দশ্যে বলেন, ছোট ভাইয়েরা নাকি সব কিছু জানে। ১৫ দিনের আন্দোলন করে তারা সবকিছুর দাবি করছে। অথচ আমরা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে দিন পার করেছি। আপনাদের আন্দোলনে আমাদের নেতা তারেক জিয়া সব প্রকার সহযোগিতা করেছে। এ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রধান মাস্টারমাইন্ড আমাদের তারেক রহমান। কথা কম বলুন। কথা বলার সময় হিসেব করে কথা বলবেন। আপনাদের ওপর জঙ্গীভূত ভর করেছে। তারা মানুষের রগ কাটে। শত্রু অনেক শক্তিশালী। আমরা এক সঙ্গে থাকলে ভালো।
অন্তবর্তী সরকারের উদ্দ্যেশে তিনি বলেন, বিএনপি সভা ডাকলে সমাবেশে পরিণত হয়, সমাবেশ ডাকলে মহাসমাবেশে পরিণত হয়। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিবেন। আমরা নির্বাচন এবং আন্দোলন উভয়ের জন্য প্রস্তুত আছি। জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো স্থানীয় নির্বাচন হবে না। একটি গণতান্ত্রিক সরকার রাষ্ট্রের দায়ভার গ্রহণ করার পর স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনা করবে।
হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে পার্বত্য চট্টগ্রাম অগ্রগতিশীল জায়গায় পরিণত হবে।
জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপুর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীম।
সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকের মামুনুর রশীদ মামুনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ধর্ম বিষয়ক সহ সম্পাদক অ্যাড. দীপেন দেওয়ান, উপজাতীয় বিষয়ক সহ সম্পাদক লে. কর্ণেল (অব.) মনীষ দেওয়ান এবং বিএনপির সাবেক পার্বত্য উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান।
এছাড়া সমাবেশে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের জেলা ও উপজেলার নেতারা বক্তব্য দেন।
আপন দেশ/এমএস
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।