
হামলার শিকার তাঁতীদল নেতা
পাবনার সাঁথিয়ায় টেন্ডার শিডিউল কিনতে গিয়ে জামায়াত সমর্থকদের হামলার শিকার হয়েছেন তাঁতীদল নেতা মো. কামরুজ্জামান। এ সময় এক সাংবাদিককেও লাঞ্ছিত করেন তারা।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাঁথিয়া পৌরসভা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মো. কামরুজ্জামান উপজেলা তাঁতীদলের সাধারণ সাধারণ। আর লাঞ্ছনার শিকার সাংবাদিক হলেন আলোকিত বাংলাদেশের উপজেলা প্রতিনিধি খালেকুজ্জামান পান্নু।
কামরুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি সাঁথিয়া পৌরসভার হাট-বাজার ইজারার টেন্ডার হয়েছে। টেন্ডার শিডিউল কেনার শেষ তারিখ আগামীকাল (২৬ ফেব্রুয়ারি) এবং দাখিল ২৭ ফেব্রুয়ারি। গত কয়েকদিন ধরেই বিএনপি সমর্থিত লোকজনকে টেন্ডার শিডিউল কিনতে দিচ্ছে না জামায়াত সমর্থিত কিছু লোকজন। এ নিয়ে উত্তেজনা চলছিল।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে আমিসহ কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী পৌরসভায় টেন্ডার শিডিউল কিনতে যায়। এ সময় জামায়াত সমর্থিত ওই চক্রটি আমাদের বাধা দেয়। সেখানে ছিল মোমিন, সাদ্দাম ওরফে মাইকেল, মোজাহিদ, বাবু, শিহাব, রতন, মাসুদসহ অনেকে। তারা এক পর্যায়ে শিডিউল কিনতে না দিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে এলোপাথারী মারধর শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে আমাদের রক্ষা করেন।
পুলিশ উপস্থিত থেকে আমাদের টেন্ডার শিডিউল কিনে দেন। হামলাকারীরা স্থানীয় জামায়াতের সমর্থক এবং জামায়াত নেতাদের আত্মীয়-স্বজন বলেও জানান তিনি।
এদিকে, এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে পৌরসভায় যান স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক। সেখানে গিয়ে তারা টেন্ডার শিডিউল কেনায় বাধার সত্যতা পান। তারা বিষয়টি পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া ইসলামকে জানালে তিনি পৌরসভা কার্যালয়ে যান। সেখানে খোঁজ নিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলে চলে যান এসিল্যান্ড। এ সময় জামায়াত সমর্থিতরা সাংবাদিক খালেকুজ্জামান পান্নুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারপিট করে। পরে তিনি দ্রুত মোটরসাইকেল নিয়ে সেখান থেকে চলে গিয়ে ওসিকে ঘটনা জানান।
সাংবাদিক খালেকুজ্জামান পান্নু বলেন, সংবাদ সংগহের সময় আমরা টেন্ডার শিডিউল কিনতে না দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাই। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলছিলাম। এসিল্যান্ডকেও বিষয়টি ফোনে জানাই। এসিল্যান্ড এসে সব দেখে চলে যাওয়ার পরপরই আমার ওপর মোমিন, রতন, হেলাল, সাদ্দাম, মাসুদসহ ১৫-২০ জন জামায়াত সমর্থক হামলা চালিয়ে মারধর করে। এ ঘটনাতাৎক্ষনিকভাবে থানার ওসিকে মৌখিকভাবে জানাই। পরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। জড়িতদের বিচার হওয়া দরকার।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়েছি। পুলিশি পাহারায় ব্যবস্থা করেছি। অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। কাউকে শিডিউল কিনতে বাধা দেয়ার মতো কিছু পাইনি। তারপরও সবাইকে সতর্ক করে আসি। অফিসে আসার দুই মিনিট পরই আবার ফোন পাই যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। তারপরও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ দিতে বলেছি।
সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান বলেন, খবর পাওয়ার পর আমি পৌরসভায় গিয়েছিলাম। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁতীদল নেতা এখনও অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে সাংবাদিক খালেকুজ্জামান পান্নু একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের একজন সাদ্দাম হোসেনের সঙে মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার পর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আপন দেশ/এমএস
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।