
ছবি: আপন দেশ
পাবনার ফরিদপুরে ইটভাটায় প্রশাসনের অভিযান ও জরিমানার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মালিক-শ্রমিকরা।
বুধবার (১২ মার্চ) সকালে উপজেলা প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হন কয়েকশ ইটভাটা শ্রমিক।
এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, দেশের ইটভাটা শিল্পকে ধ্বংস করে, ভারতীয় ইটের ওপর নির্ভরতা সৃষ্টির চক্রান্তে ২০১৩ সালে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন করা হয়। এরপর থেকে পরিবেশগত শর্ত পূরণ করে ইটভাটার লাইসেন্স করতে চাইলেও প্রশাসন নানা অজুহাতে লাইসেন্স না দিয়ে তাদের অবৈধ করে রেখেছে। প্রতিবছর ভ্যাট-ট্যাক্সসহ বৈধ-অবৈধভাবে প্রশাসন ভাটা মালিকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিলেও সম্প্রতি একের পর এক ভাটা বিনা নোটিসে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এতে রমজান মাসে কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন হাজার হাজার শ্রমিক।
এ সময় অবিলম্বে ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন তারা। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর এ বিষয়ে স্বারকলিপি জমা দেন।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি ফরিদপুর উপজেলার সভাপতি ভিপি আব্দুল হাকিম খান, সমিতির প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব জহুরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি হাজী হাসান আলী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাশেদুল ইসলাম রানা সরকার, উপজেলা শ্রমিক নেতা সাজেদুল ইসলাম, ইটভাটা মালিক সরোয়ার হোসেন, রবিউল করিম, রেজাউল করিম, সোহেল রানা, শফিউল ইসলাম জিরণ প্রমুখ।
ইটভাটা মালিক রাশেদুজ্জামান রানা বলেন, আমাদের ইটভাটা অবৈধ হলে আপনারা কীভাবে প্রতি মৌসুমে লাখ লাখ টাকার ট্যাক্স-ভ্যাট নেন। এলআর ফান্ডসহ বিভিন্ন অজুহাতে লাখ লাখ টাকা নিয়েছেন। এখন হাইকোর্ট দেখিয়ে আমাদের পথে বসাতে মাঠে নেমেছেন। মানুষের জীবন-জীবিকা আগে না আইন আগে, সেটা ভাবুন। আমরা এ আইন মানি না।
আরওপড়ুন<<>>ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা: পুলিশের ওপর হামলায় ১২ জনের নামে মামলা
উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বলেন, আমরা বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে দাদন নিয়ে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। হঠাৎ কোনো নোটিস ছাড়াই ভাটা বন্ধ করে দিচ্ছে প্রশাসন। আমাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। মানুষের টাকা আমরা কীভাবে শোধ করবো ভাটা বন্ধ থাকলে?
মজিবর, বাবলু, সাজেদুলসহ কয়েকজন শ্রমিক জানান, ভাটা শ্রমিকদের রুটি রুজির পথ বন্ধ হলে সামাজিক বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে। তখন বাধ্য হয়ে চুরি-ডাকাতি করবেন শ্রমিকরা। বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করে ইটভাটা বন্ধ না করার আহবান জানান তারা।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, উপজেলায় ১০টি ইটভাটার ৫টিই অবৈধ। ইতোমধ্যে ৪টিতে অভিযান চালিয়ে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এসব ইটভাটা বন্ধে ১০ দিনের সময় বেধে দেয়া হয়েছে।
মালিক ও শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন, উচ্চ আদালত ও সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইটভাটায় অভিযান, জরিমানা ও অবৈধ ভাটা বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মালিক-শ্রমিকরা যে সব দাবি দাওয়া দিয়েছেন তা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে পূরণ সম্ভব নয়। এটি সম্পূর্ণ সরকারের উচ্চ মহলের এখতিয়ারভুক্ত। আমাদের এখানে কিছুই করণীয় নেই।
আপন দেশ/এমএস
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।