Apan Desh | আপন দেশ

পরকীয়ায় মেতে স্বামীকে সর্বশান্ত, স্ত্রীর বিরুদ্ধে জিডি

মাগুরা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:২২, ২৭ মার্চ ২০২৫

আপডেট: ১৮:৪৪, ২৭ মার্চ ২০২৫

পরকীয়ায় মেতে স্বামীকে সর্বশান্ত, স্ত্রীর বিরুদ্ধে জিডি

ফাইল ছবি

মাগুরা জেলার একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সম্প্রতি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। স্বামীর প্রবাস জীবনের সুযোগ নিয়ে একাধিক পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন স্ত্রী। স্বামীর অর্জিত টাকা-পয়সা উড়িয়েছেন প্রেমিকদের নিয়ে। অভিভাবকরা বারবার সতর্ক করার পরও এ উদ্দাম জীবন থামাননি স্ত্রী। পরিবার-পরিজন, সন্তানের দোহায় দিয়েও তাকে থামানো যায়নি। অবশেষে তার এ লাগামহীন যৌনজীবন যখন পরিবার আর মেনে নিতে পারছিল না, তখনই বাধে বিপত্তি।

সম্প্রতি মাগুরা জেলার এমনই ঘটনা আলোড়ন তুলেছে। ভুক্তভোগী প্রবাসীর নাম শহীদুল ইসলাম নয়ন (৪৫)। জেলার সদর থানার বাঁকা হরিশপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল মোল্লার ছেলে তিনি।

একই থানার বাটিকাবাড়ি গ্রামের মিজানুর রহমানের কন্যা সুরাইয়া ইসলাম আশাকে (৩২) নয়ন বিয়ে করেন প্রায় ১৪ বছর আগে। বিয়ের পর তাদের এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। তারপর মধ্যপ্রাচ্যে চাকরিরত নয়ন দেশে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন।

জানা যায়, স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে আশা একাধিক পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ান। কখনো পাশের বাড়ির যুবকের সঙ্গে, কখনো পাশের গ্রামের কারো সঙ্গে। আশার এ অনৈতিক জীবন সম্পর্কে জানতে পেরে নয়নের মা মুক্তিযোদ্ধা সেলিনা খাতুন মেনু তাকে সতর্ক করেন। তাতে আশা ক্ষিপ্ত হয়ে একাধিকবার বৃদ্ধা শাশুড়ির গায়ে হাত তোলেন।

ঘটনাক্রমে আশার এ উত্তাল যৌনজীবন সম্পর্কে জ্ঞাত হন তার প্রবাসী স্বামী নয়ন। নয়ন স্ত্রীকে এসব করতে বারণ করায় আশা আগের চেয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। প্রেমিকদের দিয়ে স্বামীকে শাসান। জীবননাশের হুমকিও দেন।

এমতাবস্থায় নয়ন দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন। কিন্তু তাতেও থামাতে পারেননি আশার বেসামাল যৌনচারিতা। একই সময়ে একাধিক পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের প্রমাণ পান তার স্বামী নয়ন। 

আরও পড়ুন>>>ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা

সম্প্রতি পাশের বাড়ির এক যুবকের সঙ্গে গভীর রাতে বেসামাল অবস্থায় হাতে-নাতে ধরা পড়েন আশা। সঙ্গত কারণেই আশার সঙ্গে সংসার বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন নয়ন। গত ২০ মার্চ কাজী অফিসের মাধ্যমে দেনমোহর ও খোরপোশ বাবদ এক লাখ ২৭ হাজার টাকা পরিশোধ করে আশাকে ডিভোর্স দেন।

তাতেই ক্ষেপেছেন আশা। গতকাল (২৬ মার্চ) সোহেল (২২), মিজানুর রহমান (৬৫), আশিক রহমান (২২), হিটলার হোসেনসহ  (২৮) প্রায় ৩০ জনের এক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে নয়নের বাড়িতে তাণ্ডব চালান। নয়নের বৃদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা মাকে শারীরিকভাবে প্রহৃত করেন।

এ ঘটনায় ২৬ মার্চ প্রবাসী নয়ন মাগুরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডি নং ১৬৮৭। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আ. জব্বার তালুকদার জিডি করার বিষয়ে অবগত আছেন জানিয়ে বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট জমা দিব।

এ প্রসঙ্গে শহীদুল ইসলাম নয়ন বলেন, আমাকে সর্বশান্ত করে দিয়েছে আমার স্ত্রী। আমি গত দুই দশকের প্রবাসজীবনে যত টাকা উপার্জন করেছি, তার সব আমার স্ত্রী লুটপাট করেছে। পরকীয়া প্রেমিকদের নিয়ে উড়িয়েছে। স্বর্ণালঙ্কার বানিয়েছে। টানা কুড়ি বছর প্রবাসে থেকেও আমি এখন রিক্ত। এখন আমার না আছে অর্থ, না আছে সংসার। উল্টো আমাকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে।

পরকীয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে সুরাইয়া ইসলাম আশা বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার স্বামী আদম ব্যবসা করতো। অনেক মানুষ তার কাছে টাকা পায়। তাই সে গ্রামে আসে না। আমার ছোট ভাইকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। আমার নামে অনেক টাকার লোন তুলেছে। এ সব চাওয়ায় সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ২৬ মার্চ স্বামীর বাড়িতে যায়। এ সময় আমার স্বামীর পরিবারের সদস্যরা আমাকে ধরে মারধর করে। আমার মেয়েকে মারধর করে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি এখনো জানি না আমাকে তালাক দেয়া হয়েছে কিনা। কোনো কাগজপত্র আমি পাইনি। তাই স্বামীর বাড়ি গিয়েছিলাম। পাঁচ বছর আগে আমি চলে যেতে চেয়েছিলাম। তবে স্বামী যেতে দেয়নি। এখন মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এখনো আমি আমার মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করুক তারা।

আপন দেশ/এমবি

 

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়