ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রতিনিধির সামনেই ভোলায় খুঁটিতে বেঁধে এক তরুণকে নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির (ইউপি সদস্য) সামনেই বেআইনিী ও অমানবিক কাণ্ড করেছেন চৌকিদার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত সোমবার সকাল ৭টার দিকে ভোলা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের বান্দেরপাড় এলাকায় ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণকে নির্যাতন করা হয়। রহিম নামের এক যুবক নির্যাতনের ভিডিওটি তার মোবাইল ফোনে ধারণ করেন৷
এ সময় পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জসিম খালাসি সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ওইদিন দুপুরেই শ্রীপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোতাহার জমাদ্দার তরুণকে নিয়ে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্যাতিত তরুণ বরিশাল অঞ্চলের শ্রীপুর আনন্দ বাজার এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় জেলে, তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করেন।
দুই মিনিট ২২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আনুমানিক ৫০ বছর বয়সী এক লোক তার ডান হাতে রশি পেঁচিয়ে দোকানের একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকে নির্যাতন করছেন। এসময় নির্যাতিত কিশোর `মারে-বাবারে` করে চিৎকার দিতে থাকে এবং বারবার নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন। এসময় সেখানে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ বেশ কয়েকজন কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধ উপস্থিত ছিলেন।
মুঠোফোনে ভিডিও ধারণা করা কিশোর রহিম জানান, ‘গরু চুরির সন্দেহে তাকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনকারী ওই লোকের নাম আমার জানা নেই। তবে তিনি ভোলার বাপ্তা ইউনিয়নের শুটিং স্কুল এলাকার চৌকিদার।’
ইউপি সদস্য জসিম খালাসি জানান, তিনি ওইদিন সকালে ওই তরুণকে বান্দের পাড় এলাকায় দেখতে পান। এসময় তিনি তার পরিচয় জানতে চান। তার পরিচয় জানার একপর্যায়ে সেখানে অনেক লোকের সমাগম ঘটে। এসময় নির্যাতনকারী ওই চৌকিদার মোটরসাইকেলে করে চুরি হওয়া গরু খুঁজতে বের হয়ে সেখানে ওই তরুণকে দেখতে পান। একপর্যায়ে তিনিও ওই তরুণের পরিচয় জানতে চান। তিনি শ্রীপুর এলাকার বাসিন্দা হয়েও এখানে কেন এসেছে এমন প্রশ্ন রেখেই তাকে রশি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন শুরু করেন। জোর করে তার গরু কে চুরি করেছে, তা জানতে চান। কিন্তু কিশোর বারবারই চুরি সংক্রান্ত কোনো ঘটনা জানেন না বলে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আকুতি জানান। কিন্তু নির্যাতনকারী তাকে নির্যাতন করতেই থাকেন।
ইউপি সদস্য আরো জানান, কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই চৌকিদার তাকে মারতে শুরু করেন। তাকে চেষ্টা করেও কেউ থামাতে পারেনি।
শ্রীপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোতাহার জমাদ্দার জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম খালাসি তাকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকে নেন। পরে ওই তরুণকে তার হাতে তুলে দিলে তিনি তাকে নিয়ে শ্রীপুর চলে যান। এরপর সেখানে তার চিকিৎসা করানো হয়।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাপ্তা ইউনিয়নের শুটিং স্কুল এলাকায় গিয়েও ওই নির্যাতনকারীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির জানান, এ ঘটনাটি তার জানা নেই। আজ সারাদিন তিনি ব্যস্ত ছিলেন। সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আপন দেশ/আরএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।