ছবি : আপন দেশ
পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে চলতি মার্চেই ট্রেন চলবে। এ মাসের মাঝামাঝি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া স্টেশন পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ৪২ কিলোমিটারে ট্রেন চালানো হবে। সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে রেল লিংক প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সবাই। ইতোমধ্যে সেতুর পাঁচ দশমিক চার কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
মূল সেতুর অগ্রগতি ৮৮ ভাগ। আর ভাঙ্গা-মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৯২ শতাংশের ওপরে। মূল সেতুতে অবশিষ্ট মুভমেন্ট জয়েন্ট আর ৭৫০ মিটার স্ল্যাব ট্রাকের কাজ চলছে জোরেশোরে।
বুধবার (১ মার্চ) এসব তথ্য নিশ্চিত করে পদ্মা মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের সিনিয়র প্রকৌশলী জহুরুল হক।
তিনি বলেন, ‘আগামী জুনে পদ্মা সেতুতে রেল চলাচল উদ্বোধন করা হবে। ওই সময় ধরেই আমরা কাজ এগিয়ে নিয়েছি। সেতুর সামান্য একটি অংশ ছাড়া সব কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সেতুতে রেললাইন বসানোর সব কাজ শেষ হবে। মার্চ মাসে রমজানের আগে পদ্মা সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হবে। পরীক্ষামূলক রেল চালানোর পর কোনো ত্রুটি দেখা দেয় কিনা, তা দেখা হবে। যেন আমরা উদ্বোধনের আগে সম্পূর্ণ একটি রেলপথ প্রস্তুত করতে পারি।’
সরেজমিন দেখা যায়, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত থেকে ট্রাককারে মূল সেতুর রেলের ট্রাক প্যানেল (লোহার পাত) আর মালামাল নেয়া হচ্ছে। বিশাল আকৃতির ট্রাক প্যানেলবোঝাই ট্রাককারটি ভায়াডাক্ট পেরিয়ে মূল সেতুতে চলছে পাথরবিহীন রেললাইনের উপর দিয়ে। সেখানে ভায়াডাক্ট ও মূল সেতুর রেল কাজের প্রকৌশলীরাও আছেন। সেতুর রেললাইন নির্মাণে চলছে শত শত শ্রমিকদের কর্মযজ্ঞ।
ক্রেনের সাহায্যে রেলের ট্রাক প্যানেল বসানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় নির্ধারিত স্থানে। এরপর ধীরে ধীরে বসিয়ে দেয়া হয় সেতুর উপর। যন্ত্রের সাহায্যে তা নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করেন প্রকৌশলীরা। এরপর প্যানেলের উপর ঢালাইয়ের আগের আনুষঙ্গিক কাজ সেরে নেন শ্রমিকরা। এভাবে একের পর এক ট্রাক প্যানেল ওয়ার্কশপ থেকে নিয়ে মূল সেতুতে তৈরি করা হচ্ছে পাথরবিহীন রেলের ট্রাক স্ল্যাব।
এরই মধ্যে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার পাথরবিহীন রেলপথ নির্মাণ কাজ শেষ। বাকি ৭৫০ মিটার রেলপথের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। সেতুজুড়ে আটটি ব্রিজ মুভমেন্ট জয়েন্টের মধ্যে সাতটির কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি একটির কাজ ১৫ মার্চের মধ্যেই শেষ করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন শ্রমিক-প্রকৌশলীরা।
পদ্মা মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের পরিদর্শক সঞ্জয় চন্দ্র রায় বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে আটটি ব্রিজ জয়েন্ট মুভমেন্ট রয়েছে। যার সাতটি শেষ। এখন শেষ জয়েন্ট মুভমেন্টের কাজ শেষ করে এ মাসেই রেল চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হবে।’
পদ্মা মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের সহকারী প্রকৌশলী লোকমান হোসাইন বলেন, ‘পাথরবিহীন এ রেলপথ তৈরিতে খরচ বেশি হলেও এটি হবে টেকসই। এ রেলপথে কোনো ঝাঁকুনি হবে না। পরবর্তী সময়ে মেরামত ব্যয় নেই বললেই চলে।’
প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-যশোর ১৬৯ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে কাজ করছে চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।
আপন দেশ/আরএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।
