সুরমা বেগমের কোলে মাহিনকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ : ছবি আপন দেশ
অবশেষে নিজের সন্তানকে ফিরে পেল সেই মা সুরমা বেগম। যিনি তিন মাসের নিজ সন্তানকে ভিক্ষুকের কোলে রেখে নিরুদ্দেশ হয়েছিলেন। লক্ষ্মীপুরের পুলিশ, কাউন্সিলর, নিঃসন্তান দম্পতির কোলে ৫দিন কাটাতে হলো শিশু মাহিনকে।
সোমবার (৬ মার্চ) বিকেলে লক্ষ্মীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাদেকুর রহমান শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। একইসঙ্গে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সেজন্য শিশুটির মা সুরমাকে সতর্ক করে দিয়েছেন আদালত।
পরে সোমবার রাতেই জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ আদালতের নির্দেশে শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার মায়ের কোলে তুলে দেন।
শিশুটিকে বুকে আগলে রেখে আদর-যত্নে বড় করতে চেয়েছিল নিঃসন্তান দম্পতি বেলাল হোসেন ও নিশি আক্তার। শিশুটি চারদিন তাদের আদরেই ছিল। প্রথম যেদিন থানায় শিশুটিকে পরিবারের লোকজন নিতে এসেছিলেন সে সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই দম্পতি। বিদায়বেলা অশ্রুসিক্ত হলেও শিশুটির জন্য ভালোবাসা আর দোয়া করবেন বলে জানিয়েছেন বেলাল।
আরও পড়ুন<>ভিক্ষুকের কোলে শিশুপুত্রকে রেখে যাওয়ার কারণ জানালেন মা
জেলা পুলিশ জানায়, সুরমা বেগমের বাবার বাড়ি সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ চরমনসা গ্রামে। গত ১ মার্চ দুপুর ২টার দিকে শিশুটিকে ভিক্ষুক বৃদ্ধা সালমা বেগমের কাছে রেখে চলে যান সুরমা বেগম। ভিক্ষুক সালমার কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে জেলা পুলিশ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন মাহমুদের ভাই বেলালের পরিবারের হেফাজতে রাখেন। পরদিন বেলাল ও তার স্ত্রী নিশি আক্তার আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে দত্তক নেন। তবে শিশুটির পরিবারের খোঁজ পেলে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা ছিল আদালতের। ফেসবুকের মাধ্যমে শিশুটির খোঁজ পেয়ে একইদিন রাতে মাসহ পরিবারের লোকজন সদর থানায় শিশুটিকে নেয়ার জন্য হাজির হন। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে তাৎক্ষণিক ফিরিয়ে দেয়া যায়নি। এতে আদালতের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করে পুলিশ।
আরও পড়ুন<> জামালপুর হাসপাতালে ২৮ দিনের শিশু রেখে মা-বাবা নিরুদ্দেশ!
সুরমা বেগম জানিয়েছেন, প্রতিমাসে ১১ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধ করতে হয় তার। কিন্তু তার স্বামী মিরন কয়েক মাস থেকে সংসার খরচ দিচ্ছে না। এনিয়ে ঘটনার দিন স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। ধার-দেনায় তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এতে দুশ্চিন্তা থেকে তিনি শিশুটিকে ফেলে রেখে চলে যান। বাড়িতে গেলে পরিবারের লোকজনের বকাঝকায় শিশুটিকে খুঁজতে থাকেন। পরদিন ফেসবুকের মাধ্যমে শিশুটির সন্ধান পান। আর কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটাবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।
